নিসান মোটর কোং তাদের ব্রিটিশ স্টার্টআপ ওয়েভের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করা নতুন ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেম, প্রো-পাইলট (ProPILOT) প্রদর্শন করেছে। সম্প্রতি টোকিওতে এই অত্যাধুনিক প্রোটোটাইপ সিস্টেমের কার্যকারিতা দেখানো হয়েছে, যেখানে ইলেকট্রিক অরিয়া (Ariya) গাড়িটি এই প্রযুক্তির সক্ষমতা তুলে ধরেছে। এই উন্নত প্রো-পাইলট সিস্টেমটি শহুরে ড্রাইভিংয়ের জটিলতাগুলো মোকাবেলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
শহরের রাস্তায় পথচারী, পার্ক করা গাড়ি এবং স্কুটারের মতো বিভিন্ন উপাদানের উপস্থিতি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য পরীক্ষামূলক গাড়িগুলিতে মোট ১১টি ক্যামেরা, পাঁচটি রাডার সেন্সর এবং একটি লিডার (Lidar) সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। এই সেন্সরগুলির সমন্বিত ব্যবস্থা গাড়িটিকে তার চারপাশের পরিবেশ সঠিকভাবে বুঝতে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং স্তর অর্জনে সহায়তা করে। এর অর্থ হল, চালকদের এখনও স্টিয়ারিং হুইলে হাত রাখতে হবে এবং যেকোনো মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ওয়েভ তাদের প্রযুক্তি জাপানের নির্দিষ্ট শহুরে পরিবেশের সঙ্গে মানানসই করার জন্য জাপানে একটি ডেভলপমেন্ট সেন্টার স্থাপন করেছে। ওয়েভের এআই ড্রাইভার (AI Driver) সফটওয়্যার-ডিফাইন্ড পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে স্থানীয় ড্রাইভিং পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়। এই প্রযুক্তিটি মানুষের শেখার এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা বোঝার পদ্ধতির দ্বারা অনুপ্রাণিত, যা গাড়িটিকে একটি দক্ষ চালকের মতো আচরণ করতে সক্ষম করে তোলে।
নিসান ২০২৭ সালের মধ্যে জাপানে এই সিস্টেমটি গণ উৎপাদনে আনার পরিকল্পনা করছে। ওয়েভের সঙ্গে এই অংশীদারিত্বের লক্ষ্য হল স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিংয়ের সম্ভাবনাকে প্রসারিত করা এবং শহুরে রাস্তাগুলিতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা। টোকিওর বাস্তব শহুরে পরিস্থিতিতে সিস্টেমটির সফল কার্যকারিতা, যেমন পথচারী এবং অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া, জটিল ট্র্যাফিক পরিস্থিতি সামলানো – এই সবই নতুন প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে আরও জোরালোভাবে প্রমাণ করে। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে নিসান তাদের গাড়ির উন্নত ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে চাইছে।
ওয়েভের এআই প্রযুক্তি, যা মূলত ডেটা এবং মেশিন লার্নিংয়ের উপর নির্ভরশীল, সেটি নিসানের প্রো-পাইলট সিস্টেমের সঙ্গে একীভূত হয়ে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। এই প্রযুক্তিটি কেবল নিরাপত্তা নয়, বরং শহুরে পরিবেশে চালকদের অভিজ্ঞতাকেও উন্নত করবে। নিসান আশা করছে যে এই নতুন প্রযুক্তি তাদের বাজারে একটি বিশেষ স্থান করে দেবে, বিশেষ করে যখন তারা টেসলার মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে।