কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ক্ষেত্রে অগ্রণী সংস্থা ওপেনএআই আজ, অক্টোবর ২১, ২০২৫ তারিখে, তাদের প্রথম ডেডিকেটেড, এআই-চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস’ চালু করার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাউজার যুদ্ধে প্রবেশ করল। একটি লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে এই ঘোষণাটি করা হয়, যা ইন্টারনেট ব্যবহারের মৌলিক পদ্ধতিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করার জন্য এআই নেতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়। এই পদক্ষেপটি সরাসরি গুগল ক্রোম এবং অ্যাপল সাফারির মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর সুপ্রতিষ্ঠিত আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস তৈরি করা হয়েছে সম্পূর্ণভাবে চ্যাটজিপিটি-এর মূল প্রযুক্তির ভিত্তিতে, যা সাধারণ এক্সটেনশনগুলোর ধারণাকে অতিক্রম করে ব্রাউজিং প্রক্রিয়ার মধ্যেই বুদ্ধিমত্তাকে গভীরভাবে গেঁথে দিয়েছে। এই নতুন ব্রাউজারের একটি মূল বৈশিষ্ট্য হলো ইন্টিগ্রেটেড চ্যাটজিপিটি সাইডবার, যা ব্যবহারকারীকে অ্যাপ্লিকেশন পরিবর্তন না করেই প্রাসঙ্গিক তথ্য সংক্ষিপ্তকরণ এবং তাৎক্ষণিক তথ্য সংশ্লেষণ করার সুবিধা দেয়। অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে, নতুন ট্যাব পৃষ্ঠাটি প্রথমে চ্যাটজিপিটি-ভিত্তিক ফলাফল প্রদর্শন করে, যেখানে ঐতিহ্যবাহী লিঙ্ক, ছবি এবং ভিডিওর জন্য দ্রুত অ্যাক্সেস ট্যাবগুলোও উপলব্ধ থাকে।
এই ব্রাউজারের একটি বড় পার্থক্য সৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্য হলো ‘এজেন্ট মোড’, যা বর্তমানে প্লাস, প্রো এবং বিজনেস স্তরের ব্যবহারকারীদের জন্য প্রিভিউতে রয়েছে। এই ক্ষমতা এআই-কে ব্যবহারকারীর পক্ষে জটিল, বহু-পদক্ষেপের কাজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদন করতে দেয়, যেমন ফর্ম জমা দেওয়া বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট সমন্বয় করা। এছাড়াও, সিস্টেমটিতে একটি মেমরি ফাংশনালিটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ব্যবহারকারীর অভ্যাস শিখে একটি অত্যন্ত ব্যক্তিগতকৃত অভিজ্ঞতা তৈরি করে। তবে, ডেটা গোপনীয়তা বজায় রাখতে ব্যবহারকারীরা এই বৈশিষ্ট্যটি বন্ধ করার বা স্ট্যান্ডার্ড ইনকগনিটো বিকল্পগুলো ব্যবহার করার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন।
প্রাথমিকভাবে, এই নতুন ব্রাউজারটি ম্যাকওএস ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে বাজারে ছাড়া হয়েছে। তবে, অদূর ভবিষ্যতে উইন্ডোজ, আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণগুলো আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এই কৌশলগত প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে ওপেনএআই ইন্টারনেটের মৌলিক স্তরে প্রবেশ করতে তাদের বৃহৎ ভাষা মডেলের (LLM) দক্ষতা কাজে লাগাচ্ছে, যা তাদের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বকে কাজে লাগিয়ে বাজারের একটি অংশ দখল করার চেষ্টা।
এই পদক্ষেপটি এমন সময়ে এলো যখন ব্রাউজার বাজার এখনও অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালের শেষের দিকের তথ্য নির্দেশ করে যে গুগল ক্রোম বিশ্বব্যাপী বাজারের প্রায় ৬৫% অংশ দখল করে রেখেছিল। এই পরিসংখ্যানটিই দেখায় যে ডিজিটাল এজেন্সিকে নতুন করে সাজানোর ক্ষেত্রে অ্যাটলাসকে কতটা বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে এবং এই প্রতিযোগিতার মাত্রা কতটা ব্যাপক।