থাইল্যান্ডের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গত ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হলো ২৭তম আন্তর্জাতিক নৃত্য ও সঙ্গীত উৎসবের অংশ হিসেবে বিশ্বখ্যাত অপেরা শিল্পী প্লাসিডো ডমিঙ্গোর ব্যাংকক অভিষেক। এই অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন এবং রাণী সুথিদা উপস্থিত ছিলেন, যা অনুষ্ঠানটিকে এক রাজকীয় মর্যাদা প্রদান করে।
স্প্যানিশ টেনর প্লাসিডো ডমিঙ্গো তাঁর অনবদ্য পরিবেশনার মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। তাঁর সাথে মঞ্চে ছিলেন কিউবান-আমেরিকান সোপ্রানো মনিকা কোনেসা এবং ইতালীয় সঙ্গীত পরিচালক বিয়াত্রিস ভেনেজি। সমালোচকদের মতে, এই পরিবেশনাটি ছিল ব্যতিক্রমী এবং এর প্রতিটি সুর ছিল মন্ত্রমুগ্ধকর। ডমিঙ্গোর দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে এটি ছিল থাইল্যান্ডে তাঁর প্রথম উপস্থিতি, যা এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটিকে ঐতিহাসিক তাৎপর্য এনে দিয়েছে।
প্লাসিডো ডমিঙ্গো, যিনি ১২টি গ্র্যামি পুরস্কারে ভূষিত এবং অপেরা জগতে কিংবদন্তী হিসেবে পরিচিত, তিনি তাঁর কর্মজীবনে ১৫০টিরও বেশি অপেরার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এবং ৪,০০০-এরও বেশি বার মঞ্চে পারফর্ম করেছেন। তাঁর এই থাইল্যান্ড সফর, বিশেষ করে ব্যাংককে তাঁর অভিষেক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে তাঁর বিরল উপস্থিতির মধ্যে অন্যতম।
বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক বিয়াত্রিস ভেনেজি, যিনি একজন প্রতিভাবান পিয়ানোবাদকও, তিনি তাঁর অনবদ্য সঙ্গীত পরিচালনায় অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছিলেন। ভেনেজি এর আগে আন্দ্রেয়া বোচেলি এবং কার্লা ফ্রাচির মতো বিশ্বখ্যাত শিল্পীদের সাথে কাজ করেছেন এবং ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে ইতালির অন্যতম প্রভাবশালী নারী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মনিকা কোনেসা, যিনি ইতালির ভেরোনা অ্যারেনাতে সবচেয়ে কম বয়সী আইডা হিসেবে ইতিহাস তৈরি করেছেন, তাঁর শক্তিশালী কণ্ঠ এবং মঞ্চে উপস্থিতি দর্শকদের মুগ্ধ করে।
এই উৎসবটি কেবল ডমিঙ্গোর পারফরম্যান্সেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল ভারত, চীন, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশের বিভিন্ন ধরণের নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশনার এক সমাহার। এটি ব্যাংকককে একটি বিশ্বমানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এই ধরনের আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠানগুলি কেবল স্থানীয় দর্শকদেরই শিল্পকলার প্রতি আকৃষ্ট করে না, বরং বিশ্বজুড়ে পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে, যা থাইল্যান্ডের পর্যটন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করে।