ইউনেস্কোর 'সিটি অফ মিউজিক' খেতাব পেল নিউ অরলিন্স

সম্পাদনা করেছেন: Inna Horoshkina One

জ্যাজের জন্মস্থান এবং সঙ্গীতের বৈচিত্র্যের প্রতীক নিউ অরলিন্স শহরটি আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনেস্কোর ক্রিয়েটিভ সিটিস নেটওয়ার্ক (UNESCO Creative Cities Network, UCCN)-এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে শহরটি 'সিটি অফ মিউজিক' বা 'সঙ্গীতের শহর' উপাধি অর্জন করেছে।

এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি কলম্বিয়ার বোগোটাতে ২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবর গৃহীত হয়। এটি নিউ অরলিন্সের সঙ্গীত ঐতিহ্যের বিশ্বব্যাপী প্রভাবের একটি স্বীকৃতি, যেখানে জ্যাজ, ব্লুজ, গসপেল এবং ফাঙ্ক—এই ঘরানাগুলো ইতিহাস, বেদনা এবং আত্মার সীমাহীন স্বাধীনতা থেকে উদ্ভূত হয়ে একত্রিত হয়েছে।

উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে সঙ্গীত

ইউনেস্কো ২০০৪ সালে UCCN প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে এই নেটওয়ার্কটি ১০০টি দেশের ৪০৭টি শহরকে সংযুক্ত করেছে, যারা অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং পরিবেশগত—এই তিন ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের কৌশলগত চালিকাশক্তি হিসেবে সৃজনশীলতাকে ব্যবহার করে।

নিউ অরলিন্সের জন্য এই মর্যাদা কেবল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিই বহন করে না, বরং এর সাথে কিছু সুনির্দিষ্ট বাধ্যবাধকতাও যুক্ত করে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • অভিজ্ঞতা বিনিময় করা;

  • বেসরকারি খাত এবং নাগরিক সমাজের সাথে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা;

  • শহুরে পরিকল্পনার মধ্যে সংস্কৃতি ও সঙ্গীতকে একীভূত করা।

  • শহরের মেয়র লাটোয়া ক্যান্ট্রেল জোর দিয়ে বলেন যে এই নেটওয়ার্কে যোগদান স্থানীয় সঙ্গীতশিল্পীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। একই সাথে, এটি সঙ্গীতের মাধ্যমে সামাজিক ঐক্যকে শক্তিশালী করবে এবং নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করবে।

    মেয়র ক্যান্ট্রেল মন্তব্য করেন, "নিউ অরলিন্স সবসময়ই একটি শহরের চেয়ে বেশি কিছু ছিল—এটি এমন একটি ছন্দ যা মানুষকে একত্রিত করে।"

    ভবিষ্যতের সঙ্গীত স্পন্দন

    UCCN-এ প্রবেশ নিউ অরলিন্সের অনন্য সাংস্কৃতিক অবদানকে তুলে ধরে, যা সম্মানজনক এই খেতাব অর্জনকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দশটি শহরের মধ্যে অন্যতম। এই পদক্ষেপ কেবল অতীতের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে না, বরং একবিংশ শতাব্দীর বৈশ্বিক সঙ্গীত সংলাপে শহরটিকে একটি কেন্দ্রীয় স্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।

    ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতি নিউ অরলিন্সকে বিশ্ব ঐতিহ্যসূচির উপর প্রভাব ফেলতে এবং বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উদ্যোগগুলোতে অংশ নিতে সক্ষম করবে।

    শিল্প বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই এই ঘটনাটিকে "নিউ অরলিন্সের বিশ্ব মঞ্চে প্রত্যাবর্তন" হিসেবে অভিহিত করছেন—এমন এক স্থান যেখানে পৃথিবীর হৃদস্পন্দন জ্যাজের ছন্দে বাজে।

    রকিং’১০০০: এক শহরের হাজার কণ্ঠ

    সাংস্কৃতিক ঐক্যের নতুন পর্বের প্রতীক হিসেবে, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে শহরটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম 'রকিং’১০০০' (Rockin’1000) কনসার্টের আয়োজন করবে। এটি একটি বিশ্বব্যাপী সঙ্গীত প্রকল্প, যেখানে সিজার্স সুপারডোম (Caesars Superdome) এর অঙ্গনে এক হাজার সঙ্গীতশিল্পী ও কণ্ঠশিল্পী একসাথে পারফর্ম করবেন।

    ২০২৬ সালের ৩১ জানুয়ারি নির্ধারিত এই কনসার্টটি সৃজনশীল সমন্বয় এবং নিউ অরলিন্সের জীবন্ত শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রতীক হবে—এমন একটি শহর, যেখানে সঙ্গীত মঞ্চে নয়, বরং প্রতিটি শ্রোতার হৃদয়ে জন্ম নেয়।

    উৎসসমূহ

    • Travel And Tour World

    • New Orleans Designated a UNESCO ‘Creative City’ for Music

    • New Orleans Submits Application to UNESCO Creative Cities Network

    • New Orleans Designated UNESCO Creative City for Music

    আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

    আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।