নাইজেরিয়ার সঙ্গীতশিল্পীরা ২০২৬ সালের গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের জন্য তাদের গান জমা দিয়েছেন, যা বিশ্ব সঙ্গীত মঞ্চে আফ্রোবিটসের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। ২০২৫ সালের ২৯শে আগস্ট ছিল গান জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। এই বছর, নাইজেরিয়ার সঙ্গীত জগত বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে চলেছে।
উইজকিডের অ্যালবাম “মোরায়ো” বর্ষসেরা অ্যালবাম এবং সেরা গ্লোবাল অ্যালবামের জন্য জমা পড়েছে। একই সাথে, তার “পিস অফ মাই হার্ট” গানটি রেকর্ড অফ দ্য ইয়ার এবং সং অফ দ্য ইয়ার বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। বার্না বয়ের “নো সাইন অফ উইকনেস” অ্যালবামটিও বর্ষসেরা অ্যালবাম এবং সেরা গ্লোবাল অ্যালবামের জন্য বিবেচিত হচ্ছে। আয়রা স্টার-এর “হট বডি” গানটি রেকর্ড অফ দ্য ইয়ার এবং সং অফ দ্য ইয়ার বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। গ্র্যামি একাডেমি ২০২৫ সালের ৭ই নভেম্বর এই পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করবে। ২০২৬ সালের গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি ২০২৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্রিপ্টো.কম এরিনাতে অনুষ্ঠিত হবে।
ডেভিডো ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে গ্র্যামি একাডেমীর একজন ভোটিং সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, যা বিশ্ব সঙ্গীত মঞ্চে নাইজেরিয়ার উপস্থিতিকে আরও শক্তিশালী করেছে। উইজকিডের “মোরায়ো” অ্যালবামটি তার প্রয়াত মায়ের প্রতি একটি বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি। এই অ্যালবামটি মুক্তি পাওয়ার আগে, তিনি “পিস অফ মাই হার্ট” এবং “কেসে (ডান্স)” গান দুটি প্রকাশ করেছিলেন, যা নাইজেরিয়ার স্পটিফাই ইতিহাসে একদিনে সর্বাধিক স্ট্রিম করা গানের রেকর্ড ভেঙেছে। বার্না বয়ের “নো সাইন অফ উইকনেস” অ্যালবামটি তার জীবনের নানা প্রতিকূলতার মধ্যে টিকে থাকার এক শক্তিশালী বার্তা বহন করে। এই অ্যালবামে ট্র্যাভিস স্কট, মিক জ্যাগার, এবং স্ট্রোমে-এর মতো আন্তর্জাতিক শিল্পীদের সাথে তার সহযোগিতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আয়রা স্টার-এর “হট বডি” গানটি তার আত্মবিশ্বাস এবং নারীশক্তির এক দারুণ প্রকাশ। এই গানটি ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্যের অফিসিয়াল আফ্রোবিট চার্টে শীর্ষ ৫-এ স্থান করে নিয়েছে। ডেভিডো, যিনি সম্প্রতি গ্র্যামি একাডেমীর একজন ভোটিং সদস্য হয়েছেন, তিনি আফ্রোবিটসের বিশ্বব্যাপী প্রভাব বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তিনি শুধু একজন শিল্পী হিসেবেই নয়, বরং আফ্রিকান সঙ্গীতের ভবিষ্যৎ গঠনেও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। এই বছর, নাইজেরিয়ার সঙ্গীতশিল্পীরা বিশ্ব মঞ্চে তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন, যা আগামী দিনে আফ্রোবিটসের বিশ্বব্যাপী আধিপত্যের ইঙ্গিত দেয়। নাইজেরিয়ার সঙ্গীত বিশ্বব্যাপী সংস্কৃতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা কেবল সঙ্গীত জগতেই নয়, বরং ফ্যাশন, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালে গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে আফ্রোবিটসের জন্য একটি পৃথক বিভাগ যুক্ত করা হয়, যা এর গুরুত্বের স্বীকৃতি। বিশ্বব্যাপী স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে নাইজেরিয়ার গানের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা এই শিল্পের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের একটি প্রমাণ। স্পটিফাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আফ্রোবিটসের শ্রোতা ৫৫০% এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৬ সালের গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে নাইজেরিয়ার শিল্পীদের এই প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে আফ্রোবিটসের বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।