বিশ্ব পপ আইকন এনরিকে ইগলেসিয়াস দুই দশক দীর্ঘ অপেক্ষার পর আবারও মুম্বাইয়ের মঞ্চে আগুন ঝরালেন। ৩০ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে, তিনি এমএমআরডিএ গ্রাউন্ডস (MMRDA Grounds)-এ পারফর্ম করেন, যেখানে ২৫,০০০-এরও বেশি উচ্ছ্বসিত শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন। এটি ছিল ২০০৪ সালের পর মুম্বাইয়ে তাঁর প্রথম কনসার্ট—অর্থাৎ দীর্ঘ ২১ বছর পর প্রত্যাবর্তন—এবং এটি ভারতের সবচেয়ে আলোচিত সঙ্গীত ইভেন্টগুলির মধ্যে অন্যতম।
Enrique Iglesias Mumbai-এ লাইভ — যা একত্রিত করে সেই শক্তি
এই জমকালো পরিবেশনাটি ছিল তাঁর দুই দিনের “ইন্ডিয়া ট্যুর ২০২৫”-এর অংশ, যা দেশের প্রধান শহরগুলিকে কভার করেছিল। যদিও এনরিকে এর আগে ২০১২ সালেও ভারত সফর করেছিলেন, তবুও মুম্বাইয়ের মঞ্চটিই ছিল তাঁর জন্য বিশেষ। দুই দশক পরে তিনি নতুন উদ্দীপনা এবং সেই একই চিরন্তন ক্যারিশমা নিয়ে এই শহরে ফিরে এলেন।
৯০ মিনিটের এই শোতে শিল্পীর সেরা হিট গানগুলি পরিবেশিত হয়—যেমন ‘Hero’, ‘Bailamos’, ‘Escape’, এবং ‘Rhythm Divine’—পাশাপাশি আধুনিক ল্যাটিন সঙ্গীতগুলিও ছিল, যা জীবন্ত যোগাযোগের শক্তিতে ভরপুর ছিল।
মঞ্চে উঠে তিনি যখন নমস্কারের ভঙ্গিতে হাত জোড় করে উচ্চারণ করলেন, "ইন্ডিয়া, আই মিসড ইউ!" (India, I missed you!), তখন পুরো হলঘর করতালির গর্জনে ফেটে পড়ল। শ্রোতাদের সাথে তাঁর এই আবেগপূর্ণ সংযোগ অনুষ্ঠানটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছিল।
এনরিকে মঞ্চে আসার আগেই দর্শকদের উন্মাদনা তুঙ্গে পৌঁছে গিয়েছিল। ইন্দো-কানাডিয়ান গায়িকা জোনিতা গান্ধী এবং প্রগ্রেসিভ ব্রাদার্স (Progressive Brothers) ডিজে জুটি তাদের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে উৎসবের আবহ তৈরি করে রেখেছিলেন। প্রথম সুর বাজার আগেই যেন উৎসবের মেজাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল।
এই কনসার্টে বলিউডের বেশ কিছু পরিচিত মুখও উপস্থিত ছিলেন। মালাইকা অরোরা, বিদ্যা বালান, রাকুল প্রীত সিং এবং জ্যাকি ভাগনানির মতো তারকারা এসেছিলেন, যা এই ইভেন্টের উচ্চ মর্যাদা ও গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছিল।
ইভিএ লাইভ (EVA Live) সংস্থার আয়োজকরা জানিয়েছেন যে প্রথম দিন ২৫,০০০-এর বেশি লোক সমাগম হয়েছিল এবং দ্বিতীয় দিনে সেই সংখ্যাটি প্রায় ৩০,০০০-এর কাছাকাছি পৌঁছেছিল। এই পারফরম্যান্সটি কেবল একটি সঙ্গীত বিজয় ছিল না, বরং এটি ভারতীয় মঞ্চের পরিপক্কতার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়েছে, যা বিশ্বমানের ট্যুরগুলিকে সর্বোচ্চ স্তরে গ্রহণ করতে সক্ষম। ব্যাকস্টেজে শিল্পী নিজেই বলেছিলেন, "ভারত এমন এক ছন্দ, যা নীরবতার মধ্যেও অনুভব করা যায়।"
যদিও বিকেসি (BKC)-এর আশেপাশে সামান্য যানজট এবং কিছু বিলম্ব হয়েছিল, তবুও কনসার্টটি অত্যন্ত উচ্চমানের ছিল। বিদায় জানানোর সময়, তাঁর চূড়ান্ত গান ‘Hero’ যেন কৃতজ্ঞতার এক সঙ্গীত হিসেবে বেজে উঠল। হাজার হাজার কণ্ঠস্বর একসাথে গান গাইছিল, আর ইগলেসিয়াস হাসিমুখে বিদায় জানিয়ে বললেন: "সঙ্গীত হলো ভালোবাসা। আর ভালোবাসা হলো তোমরা।"
