পাকিস্তানের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য শিক্ষার আলো নিশ্চিত করার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে দ্য সিটিজেনস ফাউন্ডেশন (TCF) ঘোষণা করেছে এক বিশেষ দাতব্য সঙ্গীতানুষ্ঠান— ‘উমিদ ২০২৫’। এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ২০২৫ সালের ২ নভেম্বর, দুবাই মিডিয়া সিটির বিখ্যাত ভেন্যু দ্য এজেন্ডা-তে। এই কনসার্টটি মূলত শিক্ষামূলক কর্মসূচিগুলোর জন্য তহবিল সংগ্রহের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে, যা হাজারো দরিদ্র শিশুর জ্ঞানার্জনের পথ খুলে দেবে।
এই সন্ধ্যায় মঞ্চ আলোকিত করবেন এমন কিছু শিল্পী, যাদের কণ্ঠস্বর কেবল সুর নয়, একটি মহৎ উদ্দেশ্যও বহন করে। পারফর্ম করবেন ফয়সাল কাপাদিয়া, হাসান রাহিম এবং শে গিল। তাদের সম্মিলিত পরিবেশনা সঙ্গীত ও মানবতাবাদের এক চমৎকার মিশেল তৈরি করবে। প্রতিটি বিক্রি হওয়া টিকিট একটি শিশুর পড়াশোনা, স্বপ্ন দেখা এবং বিশ্বকে পরিবর্তন করার সুযোগে রূপান্তরিত হবে।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে TCF শিক্ষাক্ষেত্রে এক বিশাল প্রভাব ফেলেছে। বর্তমানে সংস্থাটি ২,০৩৩টিরও বেশি স্কুল পরিচালনা করছে, যেখানে ৩,০০,০০০-এরও বেশি শিশু শিক্ষা গ্রহণ করছে। TCF শিক্ষার ব্যয়ের প্রায় ৯৫% পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। উল্লেখযোগ্যভাবে, কিছু শিক্ষার্থীকে মাসিক মাত্র ১০ রুপি প্রতীকী ফি দিতে হয়, যা শিক্ষার সুযোগকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে তোলে।
শিক্ষার এই বিশাল নেটওয়ার্কটি ১৪,৭০০ জন কর্মীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এদের মধ্যে অনেকেই TCF স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী, যারা শিক্ষা গ্রহণের পর ফিরে এসে অন্যদের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এই প্রচেষ্টা কেবল শিক্ষাদান নয়, বরং নারীর ক্ষমতায়ন এবং সমাজের প্রতিদান নিশ্চিত করে। এই শিক্ষকরাই ফাউন্ডেশনের মূল চালিকাশক্তি।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) ২০২৫ সালকে ‘হ্যান্ড ইন হ্যান্ড’ (হাত ধরে) স্লোগানের অধীনে ‘ইয়ার অফ কমিউনিটি’ (সম্প্রদায়ের বছর) হিসেবে ঘোষণা করেছে। উমিদ ২০২৫ কনসার্টটি এই আহ্বানের একটি জীবন্ত প্রতিধ্বনি, যা সঙ্গীতের মাধ্যমে হৃদয়কে সংযুক্ত করে এবং ভালো কাজের প্রেরণা যোগায়। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে কেয়ারিম (Careem)। তারা জোর দিয়ে বলেছে যে, শিক্ষায় বিনিয়োগই হলো পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও মানবিক সম্ভাবনা উন্মোচনের মূল চাবিকাঠি। TCF স্কুলগুলোতে ছেলে ও মেয়েরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে এবং ছাত্রীদের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৫০%-এ পৌঁছেছে, যা সুযোগের প্রকৃত সমতার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
দুবাইয়ে প্রায় ১.২ মিলিয়ন পাকিস্তানি বসবাস করেন। তাদের জন্য এই অনুষ্ঠানটি হবে এক ঐক্যের মুহূর্ত— একাত্মতার এক কাজ, যেখানে প্রতিটি সুর আশার জন্ম দেবে। এই দাতব্য কনসার্ট কেবল তহবিল সংগ্রহ নয়, বরং প্রবাসীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং বৃহত্তর সামাজিক কল্যাণে অবদান রাখার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে, যা দুবাইয়ের কমিউনিটি চেতনার সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ।