বিবিসি ব্রেকফাস্ট (BBC Breakfast) বর্তমানে কর্মীদের মধ্যে হয়রানি এবং অসদাচরণের একাধিক অভিযোগের কারণে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই পর্যালোচনাটি শুরু হয়েছে সম্পাদক রিচার্ড ফ্রেডিয়ানি (Richard Frediani)-র বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর, যিনি বর্তমানে দীর্ঘ ছুটি নিচ্ছেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, উপস্থাপক নাগা মুনচেটি (Naga Munchetty) এবং চার্লি স্টেট (Charlie Stayt)-এর সাথে ফ্রেডিয়ানির সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। মুনচেটি নাকি তার পরিচালন শৈলীকে "আক্রমণাত্মক" এবং "স্বৈরাচারী" বলে বর্ণনা করেছেন। একজন অভ্যন্তরীণ ব্যক্তি জানিয়েছেন যে ফ্রেডিয়ানির পদ্ধতি একটি "ভীতিপ্রদর্শনমূলক" কাজের পরিবেশ তৈরি করেছে।
একই সাথে, মুনচেটি নিজেও অনুপযুক্ত আচরণের অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছেন। এর মধ্যে ২০২২ সালে একটি স্টুডিও বিরতির সময় অফ-এয়ার যৌন মন্তব্য করার অভিযোগও রয়েছে। যদিও একজন ঊর্ধ্বতন প্রযোজক তাকে এই বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন, তবে কোনো আনুষ্ঠানিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিবিসি কর্মক্ষেত্রে সমস্ত অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে মোকাবিলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা সকল কর্মচারীর জন্য একটি ইতিবাচক এবং সম্মানজনক পরিবেশ বজায় রাখতে শক্তিশালী প্রক্রিয়া অনুসরণ করার উপর জোর দিয়েছে। এই অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা প্রক্রিয়াটি এখনও চলছে।
এই ঘটনাগুলি বিবিসি-র কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি নিয়ে বৃহত্তর উদ্বেগের মধ্যে ঘটেছে। বিশেষ করে, অনুষ্ঠানের সম্পাদক রিচার্ড ফ্রেডিয়ানির বিরুদ্ধে একটি পৃথক তদন্ত শুরু হওয়ার পর এই উদ্বেগগুলি আরও বেড়েছে। ফ্রেডিয়ানি, যিনি ২০১৯ সাল থেকে এই অনুষ্ঠানের সম্পাদনার দায়িত্বে আছেন, তিনি অভিযোগের মুখে দীর্ঘ ছুটি নিয়েছিলেন এবং সম্প্রতি কাজে ফিরেছেন। তবে, তার প্রত্যাবর্তনের পর থেকে, তার এবং উপস্থাপক নাগা মুনচেটি ও চার্লি স্টেটের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে বলে জানা গেছে। কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ফ্রেডিয়ানিকে এখন এই দুই উপস্থাপককে সরাসরি পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
কর্মক্ষেত্রে হয়রানি এবং অসদাচরণ কেবল ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, বরং একটি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কর্মপরিবেশ এবং সুনামের উপরও গভীর প্রভাব ফেলে। ডিজিটাল মাধ্যমের প্রসারের সাথে সাথে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি, যা সাইবারবুলিং নামেও পরিচিত, তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনের আচরণ কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা হ্রাস করতে পারে। বিবিসি-র মতো একটি বৃহৎ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের এই ধরনের অভিযোগগুলি তাদের নীতি এবং কর্মসংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিবিসি তাদের কর্মীদের জন্য একটি নিরাপদ এবং সম্মানজনক কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই ধরনের অভিযোগগুলি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করার জন্য তাদের একটি শক্তিশালী প্রক্রিয়া রয়েছে।