কিংবদন্তিদের প্রত্যাবর্তন: ‘দ্য মমি’-র চতুর্থ পর্বে ব্রেন্ডন ফ্রেজার ও র্যাচেল ভাইস
সম্পাদনা করেছেন: An goldy
সাংস্কৃতিক অ্যাডভেঞ্চার ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘দ্য মমি’ (The Mummy) আবারও নতুন করে পথচলা শুরু করতে চলেছে। ইউনিভার্সাল পিকচার্স (Universal Pictures) আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে তারা চতুর্থ চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেছে, যেখানে মূল তারকা ব্রেন্ডন ফ্রেজার এবং র্যাচেল ভাইস পর্দায় ফিরবেন। এই খবরটি দীর্ঘদিনের ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যারা রিক ও’কনেল এবং ইভলিন কার্নাহান জুটিকে আবার একসঙ্গে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। এই প্রত্যাবর্তন অ্যাডভেঞ্চার ঘরানার সিনেমা প্রেমীদের জন্য এক বিশাল আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে।
যদিও প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবুও এর নির্মাণ দল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা গেছে। পরিচালনার দায়িত্বে থাকছে ‘রেডিও সাইলেন্স’ (Radio Silence) জুটি—ম্যাট বেটিনেলি-ওলপিন এবং টাইলার জিলট। এই জুটি ‘স্ক্রিম’ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সফলভাবে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সুপরিচিত। এছাড়াও তাদের উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে ‘আই অ্যাম গোয়িং টু লুক ফর’ (Ready or Not) এবং সাম্প্রতিক ‘অ্যাবিগেইল’। চিত্রনাট্য লিখছেন ডেভিড কগেশল, যিনি ‘অরফান: ফার্স্ট কিল’-এর জন্য পরিচিত। বিশেষভাবে লক্ষণীয়, এই নতুন চলচ্চিত্রটিকে রিবুট হিসেবে নয়, বরং মূল কাহিনীর সরাসরি সিক্যুয়েল হিসেবে দেখা হচ্ছে। জানা গেছে, এটি ২০০৮ সালের তৃতীয় পর্ব ‘দ্য মমি: টুম্ব অফ দ্য ড্রাগন এম্পেরর’-এর ঘটনাগুলিকে উপেক্ষা করবে, যেখানে র্যাচেল ভাইস অংশগ্রহণ করেননি।
রিক ও’কনেল চরিত্রে ফ্রেজার এবং ইভলিন কার্নাহান চরিত্রে ভাইসের প্রত্যাবর্তন চলচ্চিত্র শিল্পে বিশাল আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। বিশেষত, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাদের ব্যক্তিগত সাফল্যের প্রেক্ষাপটে এই আগ্রহ আরও বেড়েছে। ফ্রেজার ২০২৩ সালে ‘দ্য হোয়েল’ (The Whale) চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতার অস্কার পুরস্কার জিতেছেন। অন্যদিকে, ভাইস ২০০৬ সালে ‘দ্য কনস্ট্যান্ট গার্ডেনার’ (The Constant Gardener) ছবির জন্য তাঁর অস্কার মূর্তিটি অর্জন করেছিলেন। স্টিফেন সমার্সের পরিচালনায় নির্মিত প্রথম দুটি ছবিতে তাদের জুটি অ্যাডভেঞ্চার ঘরানার চলচ্চিত্রের জন্য একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। তাদের রসায়ন ছিল দর্শকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এবং সেই আইকনিক জুটিকেই আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ। প্রথম অংশটি, যা ৭ মে ১৯৯৯ সালে মুক্তি পেয়েছিল, বিশ্বব্যাপী একটি বিশাল ফেনোমেনন তৈরি করেছিল। মাত্র ৮০ মিলিয়ন ডলার বাজেটে ছবিটি ৪১৮.১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করেছিল। এই সাফল্যের পথ ধরে আসে সিক্যুয়েল ‘দ্য মমি রিটার্নস’ (২০০১), যা ছিল ট্রিলজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় করা ছবি। এছাড়াও, স্পিন-অফ ‘দ্য স্করপিয়ন কিং’ তৈরি হয়েছিল, যা ডুয়েইন ‘দ্য রক’ জনসনের কর্মজীবনের সূচনা করেছিল। ইউনিভার্সাল ২০১৭ সালে টম ক্রুজকে নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি পুনরায় শুরু করার একটি ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল, যা কেবল এই কথাই প্রমাণ করে যে মূল অ্যাডভেঞ্চার এবং ‘মজা’ নির্ভর পদ্ধতির মূল্য কতটা বেশি ছিল, যেমনটি ফ্রেজার নিজেও উল্লেখ করেছিলেন।
এই প্রত্যাবর্তনের কাজে অভিজ্ঞ প্রযোজকরাও যুক্ত হচ্ছেন। প্রযোজক শন ড্যানিয়েল এবং প্রজেক্ট এক্স এন্টারটেইনমেন্ট (Project X Entertainment)-এর দল আবার এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। অ্যাকশন, হরর এবং হাস্যরসের মিশ্রণের জন্য পরিচিত ‘রেডিও সাইলেন্স’-কে যুক্ত করা ইঙ্গিত দেয় যে নির্মাতারা হারানো ঘরানার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। তাদের লক্ষ্য হলো সেই অ্যাডভেঞ্চার টোনের উপর মনোযোগ দেওয়া, যা শতাব্দী পরিবর্তনের সময়ে দর্শকদের মন জয় করেছিল। এই নতুন উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে ভক্তদের জন্য একটি বড় উপহার হতে চলেছে এবং আশা করা যায় এটি ফ্র্যাঞ্চাইজির পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনবে।
উৎসসমূহ
espinof.com
Vandal Random
Meristation
Radio Concierto Chile
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
