দুইবার অস্কার-বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা রিচার্ড ট্রাঙ্ক, যিনি কয়েক দশক ধরে সাইমন উইসেন্থাল সেন্টারের মোরাহ ফিল্মস ডিভিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি এখন নিজের নতুন প্রযোজনা সংস্থা, সি পয়েন্ট ফিল্মস অ্যান্ড মিডিয়া চালু করেছেন। এই নতুন অধ্যায়ে তিনি নন-ফিকশন এবং ন্যারেটিভ উভয় ধরনের প্রকল্পেই মনোনিবেশ করবেন।
ট্রাঙ্কের এই নতুন উদ্যোগ ইতিমধ্যেই দুটি তথ্যচিত্র এবং একটি ফিকশন সিরিজের কাজ শুরু করেছে। 'অলওয়েজ ২৮' নামের একটি চলচ্চিত্রে ডি-ডে-এর পরে নাৎসি হেফাজতে নিহত এক ইহুদি-আমেরিকান সৈনিক নাথান বি. বাসকিন্ডের জীবন কাহিনী তুলে ধরা হবে। এই চলচ্চিত্রটি তার দেহাবশেষ খুঁজে বের করার এবং দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার উপর আলোকপাত করবে, যা "অপারেশন বেঞ্জামিন"-এর অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। আরেকটি তথ্যচিত্র 'দ্য রোড হোম' অক্টোবর ৭-এর হামলার পর ইসরায়েলিদের সহনশীলতা এবং ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প বলবে। এছাড়াও, 'টোটো অ্যান্ড কোকো' নামে একটি ন্যারেটিভ সিরিজও উন্নয়নের অধীনে রয়েছে। অ্যালান ফ্রেমের বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি এই গল্পটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টোটো কুপম্যান এবং কোকো শ্যানেল নামে দুই নারীর ভিন্ন পথ বেছে নেওয়ার কাহিনী বলবে। একজন গুপ্তচর হিসেবে নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন বিপন্ন করেছিলেন, অন্যজন দখলকৃত প্যারিসে বিলাসবহুল জীবনযাপন করে নাৎসিদের সাথে সহযোগিতা করেছিলেন। ট্রাঙ্কের এই পদক্ষেপ ইতিহাস, মানবাধিকার এবং সহনশীলতার উপর ভিত্তি করে বিষয়বস্তু তৈরিতে তাঁর নতুন যাত্রার সূচনা করেছে।
সাইমন উইসেন্থাল সেন্টারের মোরাহ ফিল্মস, যা দুইবার একাডেমি অ্যাওয়ার্ড জিতেছে, হলো একটি বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র বিভাগ যা আধুনিক ইহুদি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করে আসছে। মোরাহ ফিল্মস 'জেনোসাইড' (১৯৮১) এবং 'দ্য লং ওয়ে হোম' (১৯৯৭) -এর মতো অস্কার-বিজয়ী চলচ্চিত্রের জন্য পরিচিত। রিচার্ড ট্রাঙ্ক মোরাহ ফিল্মসের নির্বাহী প্রযোজক, প্রধান লেখক এবং পরিচালক হিসেবে দীর্ঘকাল ধরে কাজ করেছেন। তিনি মোরাহ ফিল্মসের মাধ্যমে 'দ্য লং ওয়ে হোম'-এর মতো চলচ্চিত্রের প্রযোজনা করেছেন, যা ১৯৯৭ সালে সেরা তথ্যচিত্র হিসেবে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। তাঁর নতুন সংস্থা সি পয়েন্ট ফিল্মস অ্যান্ড মিডিয়া-র মাধ্যমে ট্রাঙ্ক এই উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অক্টোবর ৭-এর হামলার পর ইসরায়েলিদের সহনশীলতা নিয়ে তৈরি হতে চলা 'দ্য রোড হোম' তথ্যচিত্রটি বর্তমান সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে তুলে ধরবে। এই ধরনের চলচ্চিত্রগুলি কেবল ঐতিহাসিক ঘটনাই নয়, বরং মানবজাতির সহনশীলতা এবং প্রতিকূলতার মুখে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতাকেও আলোকিত করে। রিচার্ড ট্রাঙ্কের এই নতুন উদ্যোগ চলচ্চিত্র জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা যায়।