ওয়ার্নার হার্জগের 'দ্য ঘোস্ট এলিফ্যান্টস': রহস্যময় আফ্রিকান দৈত্যদের অন্বেষণ
সম্পাদনা করেছেন: An goldy
চলচ্চিত্র নির্মাতা ওয়ার্নার হার্জগ তার আসন্ন তথ্যচিত্র 'দ্য ঘোস্ট এলিফ্যান্টস'-এর মাধ্যমে আফ্রিকার দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে এক কিংবদন্তী হাতিদের দলের অনুসন্ধানের এক অসাধারণ কাহিনী তুলে ধরেছেন। এই চলচ্চিত্রে প্রকৃতিবিদ ডঃ স্টিভ বোয়েসের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের এক রোমাঞ্চকর যাত্রা বর্ণিত হয়েছে, যিনি এই রহস্যময় দৈত্যদের অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজছেন। ডঃ বোয়েস, নামিবিয়ার অভিজ্ঞ ট্র্যাকারদের সহায়তায়, অ্যাঙ্গোলার উচ্চভূমিতে এক নতুন প্রজাতির বিশাল হাতির সন্ধান করছেন।
এই তথ্যচিত্রটি ফেনিওভি হাতির (Fénykövi elephant) সাথে একটি সম্ভাব্য জিনগত সংযোগের বিষয়টিও তুলে ধরেছে, যা পৃথিবীর বৃহত্তম স্থলচর প্রাণী হিসেবে পরিচিত। ফেনিওভি হাতি ১৯৫৫ সালে হাঙ্গেরিয়ান শিকারী জোসেফ জে. ফেনিওভি দ্বারা নিহত হয়েছিল এবং বর্তমানে এটি ওয়াশিংটন ডিসি-তে স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্টোরিতে সংরক্ষিত আছে। এই বিশাল হাতির নমুনাটি প্রায় ১১ টন ওজনের এবং এটি পৃথিবীর বৃহত্তম স্থলচর প্রাণীর একটি প্রতীক।
হার্জগ এই চলচ্চিত্রটিকে 'হাতির ফ্যান্টাসি' হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা হারমান মেলভিলের 'মবি ডিক'-এর মতো কিংবদন্তী অনুসন্ধানের সাথে তুলনীয়। তিনি মনে করেন, এই অনুসন্ধান কেবল একটি বৈজ্ঞানিক অভিযান নয়, বরং এটি মানুষের স্বপ্ন, কল্পনা এবং বাস্তবতার মধ্যে এক গভীর সংযোগ স্থাপন করে। তথ্যচিত্রটি অ্যাঙ্গোলার পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গমতা এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক মনোমুগ্ধকর চিত্র তুলে ধরেছে, যা 'আফ্রিকার জল সরবরাহকারী' (water tower of Africa) নামেও পরিচিত। এই অঞ্চলটি বহু নদীর উৎস এবং এটি আফ্রিকার অবশিষ্ট হাতির দুই-তৃতীয়াংশের আবাসস্থল।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে, অ্যাঙ্গোলার দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের কারণে হাতিদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছিল। যুদ্ধের সময় শিকার এবং ভূমি মাইনের কারণে অনেক হাতি প্রতিবেশী দেশগুলিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। তবে, ডঃ বোয়েস এবং তার দল বিশ্বাস করেন যে কিছু হাতি এখনও অ্যাঙ্গোলার দুর্গম অঞ্চলে লুকিয়ে রয়েছে, যা তাদের 'ভূতের হাতি' (ghost elephants) হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। এই হাতিদের খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা কেবল একটি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানই নয়, এটি একটি গভীর রহস্য উদঘাটনেরও প্রয়াস।
'দ্য ঘোস্ট এলিফ্যান্টস' বর্তমানে পোস্ট-প্রোডাকশনে রয়েছে এবং মুক্তির তারিখ শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। এই চলচ্চিত্রটি দর্শকদের আফ্রিকার বন্যপ্রাণী, তাদের টিকে থাকার সংগ্রাম এবং প্রকৃতির গভীর রহস্যের এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।
উৎসসমূহ
The Guardian
WGHN
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
