সান সেবাস্টিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে ড্যানিয়েল হ্যান্ডলারের '২৭ নাইটস'-এর প্রিমিয়ার
সম্পাদনা করেছেন: An goldy
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে সান সেবাস্টিয়ান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (SSIFF) প্রতিযোগিতা বিভাগে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে চলেছে উরুগুয়ের চলচ্চিত্র নির্মাতা ড্যানিয়েল হ্যান্ডলার পরিচালিত এবং অভিনীত '২৭ নাইটস'।
চলচ্চিত্রটি ৮৩ বছর বয়সী মার্থা হফম্যানের জীবনকে কেন্দ্র করে নির্মিত, যাকে তার দুই কন্যা একটি মানসিক স্বাস্থ্য ক্লিনিকে অনিচ্ছাকৃতভাবে ভর্তি করিয়ে দেয়। হ্যান্ডলার এই চলচ্চিত্রে কাসারেস নামক একজন বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যিনি মার্থার অবস্থা মূল্যায়নের দায়িত্বে রয়েছেন। এই গল্পটি বার্ধক্যে মানসিক স্বাস্থ্য এবং জটিল পারিবারিক সম্পর্কের গভীর দিকগুলো অন্বেষণ করে। এটি একটি বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত, যেখানে নাতালিয়া ভিতোর লেখা একটি উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই কাহিনি তৈরি করা হয়েছে। উপন্যাসে একজন ৮৮ বছর বয়সী শিল্পীর জীবন উঠে এসেছে, যাকে ভুলভাবে পিকস ডিজিজ-এ আক্রান্ত বলে নির্ণয় করা হয়েছিল এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে একটি মামলার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে তিনি সুস্থ ছিলেন।
এই চলচ্চিত্রটি শুধুমাত্র বার্ধক্য এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলিকেই তুলে ধরে না, বরং এটি পারিবারিক বন্ধন এবং একে অপরের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রশ্নগুলিকেও সামনে নিয়ে আসে। অনিচ্ছাকৃতভাবে হাসপাতালে ভর্তি করার ফলে পরিবারের উপর যে চাপ সৃষ্টি হয়, তা নিয়ে গবেষণা হয়েছে এবং দেখা গেছে যে অনেক পরিবার এই প্রক্রিয়ায় নিজেদের অসহায় এবং বিচ্ছিন্ন মনে করে।
ড্যানিয়েল হ্যান্ডলারের এই চলচ্চিত্রটি সান সেবাস্টিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে তার দ্বিতীয় উপস্থিতি। এর আগে 'আন কাবো সুয়েল্টো' (Un cabo suelto) নামক তার আরেকটি চলচ্চিত্র 'হোরাইজোনটেস ল্যাটিনোস' বিভাগে প্রদর্শিত হয়েছিল, যা ২০১৪ সালে এই উৎসবের WIP Latam ইন্ডাস্ট্রি অ্যাওয়ার্ড জিতেছিল। হ্যান্ডলারের অভিনয় জীবনের পাশাপাশি পরিচালনার ক্ষেত্রেও তিনি একজন পরিচিত নাম। তিনি ২০১০ সালে 'নরবার্তো'স ডেডলাইন' (Norberto's Deadline) চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
'২৭ নাইটস' চলচ্চিত্রটি কেবল একটি পারিবারিক নাটকই নয়, এটি জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষের মানসিক অবস্থা এবং পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে তাদের লড়াইয়ের একটি প্রতিচ্ছবি। চলচ্চিত্রটি দেখায় কিভাবে ভুল বোঝাবুঝি এবং ভুল চিকিৎসা একজন ব্যক্তির জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে, এবং কিভাবে পরিবারগুলো এই ধরনের পরিস্থিতিতে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে পারে বা দূরে সরে যেতে পারে। এটি বার্ধক্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সমাজে প্রচলিত ধারণাগুলিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। এই চলচ্চিত্রটি দর্শকদের বার্ধক্য, মানসিক স্বাস্থ্য এবং পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করবে।
উৎসসমূহ
eldiario.es
Festival de San Sebastián
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
