দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তিশালী তথ্যচিত্র সিরিজ 'স্কুল টাইস' ২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক এমির অ্যাওয়ার্ডে সেরা তথ্যচিত্র বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে। রিচার্ড ফিন গ্রেগরি পরিচালিত এবং আইডিয়া ক্যান্ডি প্রযোজিত এই সিরিজটি স্বনামধন্য বয়েজ স্কুলগুলিতে পদ্ধতিগত গ্রুমিং এবং যৌন নির্যাতনের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলি সাহসিকতার সাথে তুলে ধরেছে। তথ্যচিত্রটি শিকারদের ট্রমা, নীরবতার সংস্কৃতি এবং কর্তৃপক্ষের অপর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়াগুলি উন্মোচন করে, যার মূল লক্ষ্য হলো অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে জবাবদিহিতা নিয়ে একটি জাতীয় সংলাপ শুরু করা।
এই মনোনয়নটি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য আন্তর্জাতিক এমির অ্যাওয়ার্ডে একটি ঐতিহাসিক বছরকে চিহ্নিত করে, কারণ দেশটি রেকর্ড সংখ্যক পাঁচটি মনোনয়ন অর্জন করেছে। বিজয়ীদের নাম ২০২৫ সালের ২৪শে নভেম্বর নিউ ইয়র্ক সিটিতে ঘোষণা করা হবে। 'স্কুল টাইস' বর্তমানে Showmax-এ উপলব্ধ রয়েছে। এই তথ্যচিত্রটি দক্ষিণ আফ্রিকার শিক্ষা ব্যবস্থার গভীরে থাকা সমস্যাগুলিকে সামনে এনেছে এবং এটি কেবল একটি পুরস্কারের মনোনয়নই নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক আলোচনার সূত্রপাতও বটে।
'স্কুল টাইস' সিরিজটি ১৬ বছর বয়সী টমাস ক্রুগারের মর্মান্তিক আত্মহত্যার ঘটনা, পার্কটাউন বয়েজ হাই স্কুলের একজন প্রাক্তন শিক্ষকের দ্বারা হিংসাত্মক ও যৌন আচরণের স্বাভাবিকীকরণ এবং হুলিও মরদোহের আত্মহত্যার মতো ঘটনাগুলিকে তুলে ধরেছে, যিনি তার স্কুল ক্রীড়া প্রশিক্ষকের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সিরিজের শেষ পর্বে স্কুল প্রশিক্ষকদের একটি চক্রকে যৌন অপরাধের অভিযোগে তদন্ত করা হয়েছে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশ সার্ভিস কর্নেল হেইলা নিম্যান্ডের বক্তব্যও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছে আইডিয়া ক্যান্ডি, যারা 'ডেভিলসডর্ফ', 'স্টাইনহেইস্ট' এবং 'কনভিক্ট কনম্যান'-এর মতো কাজের জন্য পরিচিত। এটি শিশুদের অধিকার, শিশু সুরক্ষা এবং অন্যান্য আইনি, মনস্তাত্ত্বিক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির বিশেষজ্ঞদের অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। এই সিরিজে শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ লুক ল্যাম্পব্রেখট এবং চাইল্ডলাইন সাউথ আফ্রিকার সিইও ডুমিসিলে নালা সহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক এমির অ্যাওয়ার্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার এই অর্জন দেশটির টেলিভিশন শিল্পের জন্য একটি বড় মাইলফলক, যা প্রমাণ করে যে দক্ষিণ আফ্রিকার গল্পগুলি বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের স্থান করে নিতে সক্ষম। মোট পাঁচটি মনোনয়ন নিয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা এই বছর যুক্তরাজ্য এবং ব্রাজিলের পরেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এই সাফল্য কেবল দেশের প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতাদেরই স্বীকৃতি দেয় না, বরং আন্তর্জাতিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিষয়বস্তুর ক্রমবর্ধমান প্রভাবকেও তুলে ধরে।