২০২৫ সালের 'বেস্ট অফ নলিউড' (BON) পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে, যা নাইজেরিয়ান চলচ্চিত্র শিল্পের বার্ষিক শ্রেষ্ঠত্বকে উদযাপন করে। এই বছর, 'সেভেন ডোরস' (Seven Doors) চলচ্চিত্রটি নয়টি মনোনয়ন নিয়ে তালিকার শীর্ষে নিজেদের স্থান দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। এই বিশাল সংখ্যক মনোনয়ন স্পষ্টতই তুলে ধরে যে ছবিটি নাইজেরিয়ান চলচ্চিত্রের অগ্রগতিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এই সাফল্য নলিউড শিল্পের ক্রমবর্ধমান পরিপক্কতা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে। গত কয়েক বছর ধরে এই শিল্পটি কেবল স্থানীয় দর্শকদের মধ্যেই নয়, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করছে এবং বিশ্বব্যাপী চলচ্চিত্র সমালোচক ও দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে চলেছে। 'সেভেন ডোরস'-এর এই নেতৃত্ব প্রমাণ করে যে নলিউড এখন গুণগত মানের দিক থেকে আরও উন্নত হচ্ছে।
এই ১৭তম বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের জমকালো আয়োজন ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য ভেন্যু হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে নাইজেরিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানী লাগোসের বিখ্যাত ফেডারেল প্যালেস হোটেল। 'সেভেন ডোরস' চলচ্চিত্রটি 'সেরা পরিচালক' এবং বিশেষত ফেমি আদেবায়োর (Femi Adebayo) অনবদ্য কাজের জন্য 'সেরা অভিনেতা' সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে পুরস্কারের দাবিদার। এই প্রধান বিভাগগুলিতে মনোনয়ন পাওয়া ছবিটির সামগ্রিক শ্রেষ্ঠত্বের ইঙ্গিত দেয়। তবে, প্রতিযোগিতা বেশ তীব্র। তালিকার শীর্ষস্থান থেকে সামান্য পিছিয়ে আছে 'আবানিস্তে' (Abanisete) ছবিটি, যা আটটি মনোনয়ন পেয়েছে। এছাড়াও, 'ফার্মারের বধূ' (Farmer's Bride) এবং 'আমার মা একজন ডাইনি' (My Mother is a Witch)-এর মতো অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাজগুলিও মনোনীত হয়েছে, যা নলিউড শিল্পের মধ্যে শক্তিশালী এবং বৈচিত্র্যময় সৃজনশীল প্রবাহের প্রমাণ দেয়। এই প্রতিযোগিতা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
পুরস্কারের আয়োজকরা এই বছর একটি অভূতপূর্ব এবং বিশাল শো প্রস্তুত করছেন, যার লক্ষ্য কেবল গত বছরের অর্জনগুলিকে যথাযথভাবে উদযাপন করা নয়, বরং একটি স্মরণীয় ইভেন্ট হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করা। এই বিশাল অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে, তারা একটি অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে: সবচেয়ে দীর্ঘতম লাল গালিচার জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপনের প্রচেষ্টা। এই লাল গালিচাটি বিস্ময়করভাবে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই রেকর্ড গড়ার প্রচেষ্টাটি কেবল একটি চমকপ্রদ ইভেন্ট তৈরি করার জন্য নয়, বরং বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জনের জন্য নলিউড শিল্পের সম্মিলিত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে। এটি দেখায় যে নাইজেরিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের প্রভাব এবং পরিচিতিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও বাড়াতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
মনোনয়নের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ লাল গালিচার মতো উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনাগুলি স্বাভাবিকভাবেই জনপ্রিয়তা ও সাফল্যের দিকে নলিউডের অভ্যন্তরীণ গতিকে প্রতিফলিত করে। এই গতিশীলতা প্রমাণ করে যে নাইজেরিয়ান সিনেমা এখন আর কেবল আঞ্চলিক শিল্প নয়, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাব বিস্তারকারী এক শক্তি। স্বীকৃতির এই জোয়ার নিশ্চিত করে যে নলিউড কেবল স্থানীয়ভাবে উন্নতি করছে না, বরং বিশ্ব চলচ্চিত্রের ভূখণ্ডে একটি প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে সফলভাবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে। এই ধরনের উদ্যোগগুলি শিল্পের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং ভবিষ্যতের জন্য আরও বড় সাফল্যের পথ খুলে দেয়। নলিউড এখন বিশ্বজুড়ে তার গল্প বলার ক্ষমতা এবং সৃজনশীলতাকে প্রদর্শন করতে প্রস্তুত।
