মিলান ফ্যাশন সপ্তাহে রোবার্তো কাভালি তাদের বসন্ত/গ্রীষ্ম ২০২৬ কালেকশন প্রদর্শন করেছে, যা কিংবদন্তী মিশরীয় রানী ক্লিওপেট্রার দ্বারা অনুপ্রাণিত। ডিজাইনার ফাউস্টো পুগলিসি এলিজাবেথ টেলরের 'ক্লিওপেট্রা' চলচ্চিত্র থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই পোশাকগুলো তৈরি করেছেন, যা আধুনিক নারীর জন্য পরিধানযোগ্য করে তোলা হয়েছে। এই কালেকশনটি 'গোল্ড অবসেশন' নামে পরিচিত এবং এটি আভিজাত্য, সাহস ও আধুনিকতার এক অপূর্ব মিশ্রণ।
মডেলরা সোনালী পোশাকে সেজে উঠেছিল, যা তাদের মধ্যে রাজকীয়তা ও স্বাধীনতার অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছিল। পোশাকের নকশাগুলো যেন সমসাময়িক দেবীদের প্রতিচ্ছবি ছিল। জমকালো পোশাকের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, মডেলদের মেকআপ এবং হেয়ারস্টাইলে ছিল এক সতেজ, প্রাকৃতিক ছোঁয়া। তাদের চুলে ছিল নরম ঢেউ এবং মুখে ছিল খুবই সাধারণ মেকআপ, যা তাদের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল। কালেকশনে ব্যবহৃত ফেব্রিকের মধ্যে ছিল ফিল কুপি, ডেভোর, কোটেড লেস, লিকুইড জার্সি এবং থ্রি-ডাইমেনশনাল জ্যাকার্ড, যা পোশাকে এক ধরনের সাবলীলতা এনেছে। ডেনিমকেও এই কালেকশনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা ব্র্যান্ডের ঐতিহ্যের সাথে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছে।
এই বিশেষ অনুষ্ঠানে সঙ্গীতশিল্পী এলোডি, অ্যানালিসা এবং ক্লারার মতো অনেক সেলিব্রিটি উপস্থিত ছিলেন, যা ব্র্যান্ডটির ব্যাপক জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে। মিলান ফ্যাশন সপ্তাহের এই আসরটি নতুন প্রতিভার আত্মপ্রকাশের একটি মঞ্চও ছিল। ভার্সেসের ডারিও ভিটালে, গুচির ডেমনা এবং বট্টিগা ভেনেতার লুইস ট্রটারের মতো নতুন ডিজাইনাররা তাদের নিজস্ব শৈলী প্রদর্শন করেছেন। কিয়ারা ফেরাগনি, আইস স্পাইস এবং লর্ডস লিওনের মতো তারকারাও তাদের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।
ক্লিওপেট্রার ফ্যাশন প্রভাব কেবল এই কালেকশনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি ফ্যাশন জগতে এক দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্য তৈরি করেছে। তার সময়ের অলঙ্কার, পোশাকের নকশা এবং সাজসজ্জা আজও ডিজাইনারদের অনুপ্রাণিত করে। বিশেষ করে স্টেটমেন্ট জুয়েলারি, এমব্রয়ডারি করা পোশাক এবং সোনালী রঙের ব্যবহার তার ফ্যাশন ঐতিহ্যের অংশ। রোবার্তো কাভালি-র এই কালেকশনটি কেবল পোশাকের প্রদর্শনী ছিল না, বরং এটি ছিল ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার এক মেলবন্ধন। এটি প্রমাণ করে যে, অতীত থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েও বর্তমানের জন্য নতুন কিছু তৈরি করা সম্ভব, যা সময়ের সাথে সাথে প্রাসঙ্গিক থাকবে।