আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর, ২০২৫ পর্যন্ত প্যারিস ফ্যাশন উইকের আসর বসবে, যেখানে শতাধিক ফ্যাশন হাউস তাদের স্প্রিং/সামার ২০২6 কালেকশন উপস্থাপন করবে। এই আয়োজনটি কেবল ফ্যাশন ট্রেন্ড নির্ধারণের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি বিশ্ব অর্থনীতিতেও এক বিশাল প্রভাব ফেলে। প্যারিস ফ্যাশন উইক প্রতি বছর প্রায় ১০ বিলিয়ন ইউরো টার্নওভার তৈরি করে, যা ফ্রান্সের জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।
এই ইভেন্টটি কেবল পোশাক প্রদর্শনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটি হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহন এবং অন্যান্য অনেক সহযোগী শিল্পের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করে, যা 'রিপল এফেক্ট' নামে পরিচিত। এই বছর প্যারিস ফ্যাশন উইক এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছে, যেখানে বেশ কিছু বড় ফ্যাশন হাউসে নতুন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টররা তাদের প্রথম কালেকশন নিয়ে আসছেন। ম্যাথিউ ব্লাজি শ্যানেলের জন্য, জোনাথন অ্যান্ডারসন ডিওরের জন্য, এবং পিয়েরপাওলো পিকোলি বালেন্সিয়াগার জন্য তাদের প্রথম ডিজাইন প্রদর্শন করবেন। এই নতুন আগমনগুলি ফ্যাশন জগতে এক নতুন উদ্দীপনা নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা শিল্পের গতানুগতিক ধারাকে পরিবর্তন করতে পারে।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে, অনেক ব্র্যান্ড এখন তাদের কৌশল পরিবর্তন করছে। তারা কেবল জমকালো প্রদর্শনীর উপর নির্ভর না করে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং টেকসই পদ্ধতির উপর জোর দিচ্ছে। জেনারেটিভ এআই-এর মতো প্রযুক্তিগুলি ডিজাইন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে এবং কম সময়ে নতুন কালেকশন তৈরি করতে সাহায্য করছে। এই উদ্ভাবনগুলি ব্র্যান্ডের দৃশ্যমানতা বাড়াতে এবং খরচ কমাতে সহায়ক হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪ সালের প্যারিস ফ্যাশন উইকে ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে প্রায় ৪৯৯ মিলিয়ন ডলারের মিডিয়া ইমপ্যাক্ট তৈরি হয়েছিল।
স্প্রিং/সামার ২০২6 কালেকশনে, আমরা বিভিন্ন ধরণের ট্রেন্ড দেখতে পাব। 'গর্পকোর' এবং স্পোর্টসওয়্যার-এর মিশ্রণ, যেমন সকার জার্সি, কার্গো শর্টস, এবং হাইকিং বুট, এই মৌসুমে জনপ্রিয় হবে। এছাড়াও, পরিবেশ-বান্ধব ডিজাইন এবং টেকসই ফ্যাব্রিকের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে, যা বর্তমান সময়ের চাহিদার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। ফ্যাশন এখন কেবল পোশাক নয়, বরং এটি ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি এবং সামাজিক বার্তার মাধ্যম হয়ে উঠছে। এই প্যারিস ফ্যাশন উইক কেবল ট্রেন্ড নির্ধারণ করবে না, বরং এটি ফ্যাশন শিল্পের ভবিষ্যৎ গতিপথকেও নির্দেশ করবে।