বেইজিং-এ একটি সামরিক কুচকাওয়াজে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে মানব দীর্ঘায়ু এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে অমরত্ব লাভের সম্ভাবনা নিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শোনা গেছে। এই কথোপকথনটি বিশ্ব নেতাদের মধ্যে ঘটেছিল যারা ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
আলোচনার সময়, পুতিনের অনুবাদক জানান যে জৈবপ্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতির ফলে মানব অঙ্গ প্রতিস্থাপন সম্ভব হবে, যা দীর্ঘ জীবন এবং এমনকি অমরত্বও এনে দিতে পারে। এর উত্তরে শি জিনপিং বলেন যে, এই শতাব্দীতে মানুষের আয়ু ১৫০ বছর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে কিছু পূর্বাভাস রয়েছে। এই আলোচনাটি এমন এক সময়ে হয়েছে যখন চীনে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির উপর অবৈধ অঙ্গ সংগ্রহের অভিযোগ দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা অতীতেও সম্মতি ছাড়াই জোরপূর্বক স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং অঙ্গ সংগ্রহের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই গুরুতর মানবাধিকার উদ্বেগগুলির প্রতিক্রিয়ায়, মার্কিন কংগ্রেস এই সমস্যা মোকাবেলার জন্য আইন প্রণয়ন করেছে। প্রস্তাবিত 'ব্লক অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট পারচেজেস ফ্রম চায়না অ্যাক্ট' (BLOCK Act) চীনে উৎপাদিত অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য ফেডারেল পরিশোধ নিষিদ্ধ করার লক্ষ্য রাখে, যদি অঙ্গের উৎস যাচাই করা না যায়। এছাড়াও, 'স্টপ ফোর্সড অর্গান হার্ভেস্টিং অ্যাক্ট' অঙ্গ পাচারের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং বিদেশী অঙ্গ সংগ্রহের পদ্ধতির উপর গবেষণা বাধ্যতামূলক করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
প্রযুক্তিগতভাবে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং জৈবপ্রযুক্তি মানবদেহের বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করার এবং স্বাস্থ্যকর জীবনকাল বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই অগ্রগতিগুলি রোগ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। তবে, এই ধরনের গবেষণা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার নৈতিক ও সামাজিক প্রশ্নও উত্থাপন করে, বিশেষ করে যখন এটি মানবাধিকার এবং অঙ্গ সংগ্রহের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলির সাথে জড়িত।
পুতিন এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে এই অনানুষ্ঠানিক কথোপকথনটি জৈবপ্রযুক্তির অগ্রগতি এবং মানব জীবনকাল সম্প্রসারণের নৈতিক জটিলতাগুলিকে তুলে ধরে। এটি অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সাথে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের চলমান অভিযোগগুলির প্রতিও নতুন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যা আন্তর্জাতিক নজরদারি এবং জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।