নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) ইউরেনাস গ্রহের চারপাশে একটি নতুন, ক্ষুদ্র চাঁদ সনাক্ত করেছে। এই আবিষ্কারের ফলে গ্রহটির পরিচিত চাঁদের সংখ্যা ২৮ থেকে বেড়ে ২৯ হয়েছে। এস/২০২৫ ইউ১ (S/2025 U1) নামে পরিচিত এই চাঁদটি প্রথমবার ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি টেলিস্কোপের নিয়ার-ইনফ্রারেড ক্যামেরা (NIRCam) ব্যবহার করে দেখা গিয়েছিল।
এস/২০২৫ ইউ১ চাঁদের ব্যাস প্রায় ৬ মাইল (১০ কিলোমিটার), যা এটিকে ইউরেনাসের ক্ষুদ্রতম চাঁদগুলোর মধ্যে একটি করে তুলেছে। এর ক্ষীণ আলো এবং ছোট আকারের কারণে এটি প্রায় ৪০ বছর আগে ভয়েজার ২ (Voyager 2) মিশনের মতো পূর্ববর্তী মিশনগুলোতে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। চাঁদটির কক্ষপথ প্রায় বৃত্তাকার, যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি সম্ভবত তার বর্তমান অবস্থানের কাছাকাছিই গঠিত হয়েছিল। নতুন চাঁদটি গ্রহের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৩৫,০০০ মাইল (৫৬,০০০ কিলোমিটার) দূরত্বে ইউরেনাসকে প্রদক্ষিণ করছে। এটি ওফেলিয়া (Ophelia) এবং bianca নামক চাঁদগুলোর কক্ষপথের মাঝে অবস্থিত।
এই আবিষ্কার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের ক্ষীণ মহাজাগতিক বস্তু সনাক্ত করার উন্নত ক্ষমতাকে তুলে ধরেছে। ঐতিহ্যগতভাবে, ইউরেনাসের চাঁদগুলোর নামকরণ করা হয় শেক্সপিয়ার এবং আলেকজান্ডার পোপের সাহিত্যকর্মের চরিত্রদের নামে। এস/২০২৫ ইউ১ বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (IAU) থেকে আনুষ্ঠানিক নামকরণের অনুমোদন অপেক্ষায় রয়েছে। এই আবিষ্কার ইউরেনাসের জটিল চাঁদ এবং বলয় ব্যবস্থা সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটি মহাকাশ প্রযুক্তির অগ্রগতিকেই তুলে ধরেছে। এর নিয়ার-ইনফ্রারেড ক্যামেরা (NIRCam) অত্যন্ত ক্ষীণ বস্তু সনাক্ত করতে সক্ষম, যা পূর্বেকার মিশনগুলোর পক্ষে সম্ভব ছিল না। এই নতুন চাঁদটি ইউরেনাসের অন্যান্য ছোট অভ্যন্তরীণ চাঁদগুলোর মধ্যে একটি, যা গ্রহের বলয় ব্যবস্থার সাথে একটি জটিল মিথস্ক্রিয়া নির্দেশ করে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে ইউরেনাসের মতো গ্যাসীয় দৈত্যদের চারপাশের এই ধরনের চাঁদ এবং বলয় ব্যবস্থা তাদের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য প্রদান করতে পারে। এই আবিষ্কারটি মহাকাশ অনুসন্ধানের মাধ্যমে সৌরজগৎ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও গভীর করার ক্ষেত্রে টেলিস্কোপের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রমাণ করে।