X1.8 ফ্লেয়ার November 4, 2025 এ 17:15 UTC-এ ঘটেছে। ছবির ক্রেডিট: NASA/GOES-R/SUVI.
এক্স-শ্রেণির শক্তিশালী সৌর শিখা: নীরবতার সমাপ্তি এবং ২৫তম চক্রের গতিবৃদ্ধি
লেখক: Uliana S.
নভেম্বর ৪, ২০২৫ তারিখে সূর্যের বুকে এমন একটি ঘটনা ঘটল যা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জন্য ছিল বহু প্রতীক্ষিত, কিন্তু পৃথিবীর প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থার জন্য ছিল উদ্বেগজনক—একটি অত্যন্ত শক্তিশালী এক্স১.৮ শ্রেণির সৌর শিখা। বিগত পাঁচ মাসের মধ্যে এটিই ছিল প্রথম এত বড় মাপের শিখা, যা বর্তমান সৌর চক্রের দীর্ঘতম শান্ত সময়ের অবসান ঘটাল। এই বিশাল শক্তির উৎস ছিল সক্রিয় অঞ্চল ৪২৭৪, যা এর আগেও প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তার উপস্থিতি জানান দিয়েছিল। এই ঘটনাটি সৌর কার্যকলাপের ২৫তম চক্রের গতিপথকে স্পষ্ট করে দিল এবং বিজ্ঞানীদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা সৃষ্টি করল।
На видео вспышка X1.8 от 4 ноября 2025 года 17:15 UTC.
এই মহাজাগতিক ঘটনাটি ইউটিসি ১৭:১৫ মিনিটে শুরু হয়েছিল এবং এর মোট স্থায়িত্ব ছিল সুনির্দিষ্ট ৩৬ মিনিট। শিখাটি ইউটিসি ১৭:৩৪ মিনিটে তার সর্বোচ্চ বিকিরণ মাত্রায় পৌঁছায়। মহাকাশ টেলিস্কোপ থেকে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, এই বিশাল প্লাজমা নির্গমনের মূল অংশটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৫৫ ডিগ্রি কোণে সরে গিয়েছিল। এই ধরনের কৌণিক গতিপথকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ বলে মনে করেন, কারণ এটি আমাদের গ্রহের দিকে সরাসরি আঘাতের সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেয়।
বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের (ম্যাগনেটোস্ফিয়ার) সাথে এই প্লাজমা মেঘের সম্ভাব্য স্পর্শকীয় মিথস্ক্রিয়া (tangential interactions) অত্যন্ত মৃদু হবে। এর অর্থ হলো, এই শিখার কারণে শক্তিশালী ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় (geomagnetic storms) সৃষ্টির কোনো আশঙ্কা নেই। যদিও এক্স১.৮ শ্রেণির শিখাটি অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল, কিন্তু এর অনুকূল কৌণিক অবস্থান তাৎক্ষণিক বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে আমাদের গ্রহকে রক্ষা করেছে। এটি প্রমাণ করে যে মহাকাশের আবহাওয়া পরিস্থিতি নির্ধারণে প্লাজমার গতিপথ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তবে, এই সৌর শিখাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা বহন করে। এটি নিশ্চিত করে যে সূর্য সক্রিয় অঞ্চলগুলিতে শক্তি সঞ্চয়ের এক বিপজ্জনক পর্যায়ে প্রবেশ করছে, যা ভবিষ্যতে আরও গুরুতর ঘটনার জন্ম দিতে পারে। সূর্যের স্বাভাবিক ঘূর্ণনের কারণে, এই সক্রিয় অঞ্চলগুলি কয়েক দিনের মধ্যেই 'সূর্য-পৃথিবী' সরলরেখায় চলে আসবে। যখন এই পরিস্থিতি তৈরি হবে, তখন পৃথিবীর উপর সরাসরি আঘাত হানার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। এই মুহূর্তে বিজ্ঞানীদের সমস্ত মনোযোগ প্লাজমা মেঘের গতিপথের গাণিতিক মডেল তৈরির দিকে নিবদ্ধ। এই মডেলটিই চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবে যে ভবিষ্যতে পৃথিবীর জন্য কী ধরনের ঝুঁকি অপেক্ষা করছে এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হবে।
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
