আগামী ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ সংঘটিত হতে চলেছে, যা একই সাথে এই মাসের পূর্ণিমার চাঁদকেও চিহ্নিত করবে। এই পূর্ণিমার চাঁদটি ঐতিহ্যগতভাবে 'কর্নের চাঁদ' বা 'রক্ত চন্দ্র' নামে পরিচিত। এই মহাজাগতিক ঘটনাটি ঘটে যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের ঠিক মাঝখানে অবস্থান করে, চাঁদের উপর পৃথিবীর ছায়া ফেলে এবং চাঁদকে এক গভীর লাল আভায় আলোকিত করে।
এই চন্দ্রগ্রহণের বিভিন্ন পর্যায়গুলি সুনির্দিষ্ট সময়ে শুরু হবে। পেনাম্ব্রাল পর্যায়টি শুরু হবে ১৫:২৮ ইউটিসি-তে, এরপর ১৬:২৭ ইউটিসি-তে আংশিক পর্যায় শুরু হবে। পূর্ণ গ্রহণ শুরু হবে ১৭:৩০ ইউটিসি-তে, যা ১৮:১১ ইউটিসি-তে তার সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাবে এবং ১৮:৫২ ইউটিসি-তে শেষ হবে। আংশিক পর্যায়টি ১৯:৫৬ ইউটিসি-তে এবং পেনাম্ব্রাল পর্যায়টি ২০:৫৫ ইউটিসি-তে সমাপ্ত হবে। পুরো চন্দ্রগ্রহণ প্রক্রিয়াটি প্রায় ৫ ঘন্টা ২৭ মিনিট ধরে চলবে, যার মধ্যে পূর্ণ গ্রহণের সময়কাল প্রায় ১ ঘন্টা ২২ মিনিট।
এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। ইউরোপের দর্শনার্থীরা চাঁদের উদয়কালে গ্রহণের পূর্ণতা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন, তবে নির্দিষ্ট সময় অঞ্চলভেদে ভিন্ন হতে পারে। ঐতিহ্যগতভাবে, সেপ্টেম্বরের পূর্ণিমার চাঁদকেLate summer corn harvest-এর সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে 'কর্নের চাঁদ' বলা হয়। উত্তর আমেরিকায় এটি এই নামেই বেশি পরিচিত।
এই মহাজাগতিক দৃশ্য দেখার জন্য কোনো বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই; কেবল একটি পরিষ্কার আকাশই যথেষ্ট। সর্বোত্তম পর্যবেক্ষণের জন্য, আলো দূষণ কম এমন একটি স্থান নির্বাচন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই চন্দ্রগ্রহণের পর, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে একটি আংশিক সূর্যগ্রহণ ঘটবে, যা অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং অ্যান্টার্কটিকার কিছু অংশে দৃশ্যমান হবে। যারা সরাসরি এই মহাজাগতিক ঘটনাটি দেখতে পারবেন না, তাদের জন্য একটি লাইভ স্ট্রিমের ব্যবস্থা থাকবে।
এই চন্দ্রগ্রহণটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মহাবিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল এবং প্রতিটি মহাজাগতিক ঘটনা আমাদের জন্য নতুন উপলব্ধি এবং বিস্ময়ের দ্বার উন্মোচন করে। এটি কেবল একটি জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত ঘটনা নয়, বরং এটি প্রকৃতির এক অসাধারণ প্রদর্শনী যা আমাদের বৃহত্তর মহাজাগতিক প্রেক্ষাপটের অংশ হিসেবে নিজেদের উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। এই ধরনের ঘটনাগুলি আমাদের জীবনের ছোটখাটো বিষয়গুলি থেকে মনকে সরিয়ে এনে বৃহত্তর চিত্রটি দেখতে উৎসাহিত করে, যা আমাদের জীবনে শান্তি ও সামঞ্জস্য আনতে সহায়ক হতে পারে।