গ্যালাক্সির কেন্দ্রে গামা-রশ্মির আধিক্য: ডার্ক ম্যাটার ও পালসার বিতর্ককে তীব্রতর করছে নতুন তথ্য

সম্পাদনা করেছেন: Uliana S.

১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা মিল্কি ওয়ের কেন্দ্রীয় অঞ্চল থেকে নির্গত স্থিতিশীল গামা-বিকিরণের দিকে নতুন করে মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। গ্যালাকটিক সেন্টার এক্সেস (ইজিচি) নামে পরিচিত এই সুপ্রাচীন মহাজাগতিক ঘটনাটি তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এর উৎস সম্পর্কে দুটি প্রধান ধারণা প্রচলিত: হয় এটি ডার্ক ম্যাটার কণাগুলির ধ্বংসের ফল, অথবা এটি অসংখ্য মিলিসেকেন্ড পালসার থেকে আসা আলো।

গবেষকরা আমাদের ছায়াপথের গঠন ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে ডার্ক ম্যাটারের অনুমিত বন্টন প্রতিফলিত করার জন্য শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার গণনা ব্যবহার করে বিস্তারিত মডেল তৈরি করেছেন। এই সিমুলেশনগুলি থেকে প্রাপ্ত গামা-সংকেতের মানচিত্রগুলি ফার্মি স্পেস টেলিস্কোপ দ্বারা সংগৃহীত তথ্যের সাথে এক আশ্চর্যজনক মিল দেখিয়েছে। এই সাদৃশ্যটি নিঃসন্দেহে পর্যবেক্ষণ করা উজ্জ্বলতা এবং ডার্ক ম্যাটারের সাথে সম্পর্কিত প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে একটি সম্ভাব্য সংযোগের ইঙ্গিত দেয়, যা অনুমান করা হয় মহাবিশ্বের মোট ভর-শক্তির প্রায় এক-চতুর্থাংশ।

তবে, কিছু বিজ্ঞানীর মতে, মিলিসেকেন্ড পালসার—দ্রুত ঘূর্ণনশীল সুপারনোভা অবশেষ—সম্পর্কিত বিকল্প ব্যাখ্যাটিও এখনও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। পালসার তত্ত্বটিকে পর্যবেক্ষণ করা চিত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হলে, বর্তমানে রেকর্ড করা সংখ্যার চেয়ে যথেষ্ট বেশি সংখ্যক এই বস্তুর অস্তিত্ব অনুমান করতে হবে। এই অনুমানটি তারকা বিবর্তন সম্পর্কে বর্তমান ধারণাগুলিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এই বৈসাদৃশ্যটি তুলে ধরে যে, যদিও উভয় সংস্করণই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য আরও গভীর এবং ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন। এই আলোর উৎসের রহস্য উন্মোচন করা ডার্ক ম্যাটারের প্রকৃতি বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—যা মহাবিশ্বের একটি মৌলিক, কিন্তু এখনও অনিরীক্ষিত উপাদান।

এই বৈজ্ঞানিক বিতর্কের সমাধানকল্পে ২০২৬ সালে চেরেনকভ টেলিস্কোপ অ্যারে (CTA) থেকে প্রাপ্ত তথ্য কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই আন্তর্জাতিক প্রকল্পটি গামা-বিকিরণ অধ্যয়নের জন্য পরবর্তী প্রজন্মের মানমন্দির হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। ইউরোপীয় কনসোর্টিয়াম ফর রিসার্চ ইনফ্রাস্ট্রাকচার (CTAO) হিসেবে জানুয়ারি ২০২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই অ্যারেটি দুটি অংশ নিয়ে গঠিত হবে। একটি উত্তর গোলার্ধে (লা পালমা দ্বীপে), যা বহির্গ্যালাকটিক বস্তুগুলির উপর জোর দেবে, এবং অন্যটি দক্ষিণ গোলার্ধে (চিলির আতাকামা মরুভূমিতে), যা সম্পূর্ণ শক্তির পরিসীমা কভার করবে এবং গ্যালাকটিক উৎসগুলির উপর মনোনিবেশ করবে। সামগ্রিকভাবে, এই প্রকল্পটি পূর্ববর্তী টেলিস্কোপ যেমন MAGIC, H.E.S.S. এবং VERITAS-এর তুলনায় সংবেদনশীলতা দশ গুণ বাড়িয়ে দেবে, যা এই রহস্যের সমাধানে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।

উৎসসমূহ

  • AOL.com

  • Mysterious glow in Milky Way could be evidence of dark matter

  • Galactic Glow, Thought to Be Dark Matter, Now Hints at Hidden Pulsars

  • A mysterious gamma-ray glow at the Milky Way’s center may signal dark matter, new Fermi Telescope data suggests.

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।

গ্যালাক্সির কেন্দ্রে গামা-রশ্মির আধিক্য: ড... | Gaya One