আগামী ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, প্রায় ১৭ থেকে ৩৮ মিটার (৫৫ থেকে ১২৫ ফুট) আকারের অ্যাস্টেরয়েড ২০২৫ কিউডি৮ পৃথিবীর অত্যন্ত কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে। এটি চাঁদের কক্ষপথের মধ্যেও প্রবেশ করবে, তবে এটি আমাদের গ্রহের জন্য কোনো ঝুঁকি তৈরি করবে না। এই মহাজাগতিক বস্তুটি পৃথিবীর প্রায় ২ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে আসবে, যা চাঁদ থেকে পৃথিবীর গড় দূরত্বের প্রায় ০.৬ গুণ।
অ্যাস্টেরয়েডটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল ২০২৫ সালের ১৮ আগস্ট। এর গতিপথ এমন যে এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে না এবং কোনো বিপদ ঘটাবে না। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন যে এটি একটি সম্ভাব্য বিপজ্জনক গ্রহাণু (Potentially Hazardous Asteroid - PHA) হিসেবে বিবেচিত হয়নি, কারণ এর আকার একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে। ২০১৩ সালে রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্ক শহরে আঘাত হানা উল্কাপিণ্ডের সঙ্গে এর আকারের তুলনা করা হয়েছে, যা প্রায় ২০ মিটার আকারের ছিল এবং বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় বিস্ফোরিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও আঘাতের কারণ হয়েছিল। তবে, ২০২৫ কিউডি৮-এর ক্ষেত্রে এমন কোনো আশঙ্কার কারণ নেই।
নাসা (NASA) এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ESA) সহ বিশ্বজুড়ে মহাকাশ সংস্থাগুলি প্রতিনিয়ত মহাকাশের বস্তুগুলি পর্যবেক্ষণ করে চলেছে। ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত প্রায় ৩৯,২৩৬টি নিকট-পৃথিবীর বস্তু (Near-Earth Objects - NEOs) আবিষ্কৃত হয়েছে, যার মধ্যে ২,৪৯৩টি সম্ভাব্য বিপজ্জনক গ্রহাণু। অ্যাস্টেরয়েড ২০২৫ কিউডি৮ সম্ভবত ১৯৫৮, ১৯৭৬, ১৯৯৪ এবং ২০০৭ সালেও পৃথিবীর কাছাকাছি এসেছিল, তবে আগামী প্রায় ১০০ বছরে এটিই হবে এর সবচেয়ে নিকটবর্তী পর্যায়।
যারা এই মহাজাগতিক দৃশ্য দেখতে আগ্রহী, তাদের জন্য ভার্চুয়াল টেলিস্কোপ প্রজেক্ট (Virtual Telescope Project) একটি লাইভ স্ট্রিমের আয়োজন করেছে, যা এই ঘটনাটিকে ঘরে বসেই দেখার সুযোগ করে দেবে। এই মহাজাগতিক বস্তুর মতো ঘটনাগুলি আমাদের মহাজাগতিক প্রতিবেশীদের সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি উন্নত করে।