অতিবৃষ্টি এবং উত্তর ভারতের উজানে জল ছাড়ার ফলে যমুনা নদীর জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। দিল্লির ওল্ড রেলওয়ে ব্রিজে নদীর জলস্তর ২০৭.০৯ মিটার ছুঁয়েছে, যা বিপদসীমা ২০৫.৩৩ মিটারের চেয়ে অনেক বেশি। এই পরিস্থিতিতে রাজধানী শহরকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD) দিল্লির বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টির জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে এবং বাসিন্দাদের বাড়ির ভিতরে থাকার ও নিরাপত্তা নির্দেশিকা অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ নিচু এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছে। হাজার হাজার বাসিন্দাকে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
দিল্লি সরকার একটি বিস্তারিত বন্যা প্রস্তুতি পরিকল্পনা সক্রিয় করেছে, যেখানে নৌকা, লাইফ জ্যাকেট এবং মোবাইল পাম্পের মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়েছে। সুরক্ষার জন্য ওল্ড রেলওয়ে ব্রিজ যান চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত ৬৩ বছরে মাত্র চারবার যমুনা নদীর জলস্তর ২০৭ মিটার অতিক্রম করেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ২০২৩ সালের জুলাই মাস, যখন নদীর জলস্তর রেকর্ড ২০৮.৬৬ মিটারে পৌঁছেছিল।
বর্তমান পরিস্থিতি গুরুতর হলেও, জননিরাপত্তা ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর উপর জোর দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে হাথনিকুন্ড ব্যারাজ থেকে জলের অবিরাম নিঃসরণ, যেখানে জলের প্রবাহ ১ লক্ষ কিউসেকের বেশি, তা দিল্লিতে নদীর জলস্তর বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ। সাধারণত, এই জল ছাড়ার ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর দিল্লিতে তার প্রভাব দেখা যায়।
দিল্লি সরকারের সক্রিয় পদক্ষেপ, যেমন ২৪ ঘণ্টা প্রকৌশলী ও কর্মীদের মোতায়েন এবং কন্ট্রোল রুম স্থাপন, এই সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হচ্ছে। যদিও ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে, কিছু স্থানান্তরিত বাসিন্দা ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যা দুর্যোগ মোকাবিলায় ধারাবাহিক উন্নতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। এই পরিস্থিতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমাতে শক্তিশালী পরিকাঠামো এবং প্রস্তুতির গুরুত্বকে নির্দেশ করে, যা সংকটকালে সহনশীলতা এবং সম্প্রদায়ের সুরক্ষার প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন।