১৫ই আগস্ট, ২০২৫ তারিখে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের বান্নুর জেলায় একটি ভয়াবহ মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এই দুর্যোগে ১৫০ মিমি-এর বেশি বৃষ্টিপাত মাত্র এক ঘণ্টায় অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এই বিধ্বংসী বন্যার ফলে ব্যাপক ভূমিধস এবং ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে, যার ফলে অন্তত ৩৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বান্নুর জেলায় মৃতের সংখ্যা ২০৭ জন, যা এই দুর্যোগের ভয়াবহতা তুলে ধরেছে।
উদ্ধার অভিযান চলছে, তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিকাঠামো এবং চলমান বৃষ্টিপাত উদ্ধারকার্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। কর্তৃপক্ষ সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে, যা অঞ্চলটিকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছে। এই ঘটনা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানের চরম আবহাওয়ার প্রতি ক্রমবর্ধমান দুর্বলতাকেই নির্দেশ করে। মেঘভাঙা বৃষ্টি, যা সাধারণত পার্বত্য অঞ্চলে ঘটে, সেখানে হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়। এটি ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের ঘটনাগুলির তীব্রতা এবং পুনরাবৃত্তি বাড়ছে।
পাকিস্তান, যা বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে খুব কম অবদান রাখে, তবুও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ২০২২ সালের বন্যায় দেশটির এক-তৃতীয়াংশ প্লাবিত হয়েছিল এবং প্রায় ১,৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এই বছরের বন্যাগুলি মেঘভাঙা বৃষ্টির একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখিয়েছে, যা গ্রামীণ ও শহুরে উভয় পরিকাঠামোকে কয়েক মিনিটের মধ্যে ভেঙে দিয়েছে।
বান্নুর জেলার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে, কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে সময়মতো সতর্কবার্তা না পাওয়ায় অনেক জীবনহানি হয়েছে। যদিও একটি প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল, তবে বৃষ্টির আকস্মিকতা এবং তীব্রতা পূর্বাভাস ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে। এই ঘটনাগুলি পাকিস্তানের দুর্বল পরিকাঠামো, অপর্যাপ্ত সতর্কীকরণ ব্যবস্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে আবারও উন্মোচিত করেছে। এই ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় পাকিস্তানের জরুরিভাবে জলবায়ু অভিযোজন কৌশলকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।