পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা জুড়ে অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতি আরও গুরুতর হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনও বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বর্তমান সংকটজনক অবস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। বিশেষ করে জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, যেখানে কিছু এলাকায় জলস্তর প্রায় ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। এই ভারী বৃষ্টিপাত গত ২রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাতেরই একটি ধারাবাহিকতা।
দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিও এই বন্যার ব্যাপক প্রভাবের সম্মুখীন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া জেলায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই অঞ্চলগুলিতে আরও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বঙ্গোপসাগরের সামগ্রিক পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক, যার ফলে উত্তাল সমুদ্রের কারণে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার এই ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এবং দ্রুত উন্নতির কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, নদী বাঁধগুলির উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং জলস্তর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিনও এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। এই সময়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার এবং সরকারি নির্দেশাবলী মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং অপরিকল্পিত নগরায়নকে দায়ী করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই পরিকাঠামোগতভাবেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি বলে তারা মনে করেন।