ক্যারিবিয়ান সাগরে ঘূর্ণিঝড় মেলিসা অপ্রত্যাশিত দ্রুততায় শক্তি সঞ্চয় করে বর্তমানে ক্যাটাগরি ৪ স্তরে উন্নীত হয়েছে, যা জ্যামাইকা এবং পূর্বাঞ্চলীয় কিউবার জন্য গভীর সতর্কবার্তা বহন করছে। ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে, এই ঝড়টি তার সর্বোচ্চ স্থিতিশীল বাতাসের গতিবেগ ১৪০ মাইল প্রতি ঘণ্টায় (২২০ কিমি/ঘণ্টা) পৌঁছেছে। এই ধরনের দ্রুত তীব্রতা বৃদ্ধির ঘটনা আটলান্টিক অববাহিকায় বিরল, যা শনিবার সকাল থেকে রবিবার ভোরের মধ্যে ঝড়টিকে ৭০ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতি থেকে ক্যাটাগরি ৪ এ উন্নীত করেছে, যা দ্রুত তীব্রতা বৃদ্ধির স্বাভাবিক সীমার প্রায় দ্বিগুণ।
জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস তাঁর নাগরিকদের এই আবহাওয়ার বিপদকে গুরুত্ব সহকারে নিতে এবং সুরক্ষার সকল ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। পূর্বাভাস বলছে, সপ্তাহান্তে এই ঝড়টি ক্যাটাগরি ৫ স্তরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। মেলিসার গতিপথ নির্দেশ করে যে এটি জ্যামাইকার উপর দিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত অবস্থান করতে পারে এবং এরপর পূর্বাঞ্চলীয় কিউবার দিকে অগ্রসর হবে। এই ধীরগতির চলাচল উদ্বেগের কারণ, কারণ এটি একটি অঞ্চলে দীর্ঘ সময় ধরে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধীরগতি এবং তীব্রতার সংমিশ্রণ একটি বিধ্বংসী, রেকর্ড-ভাঙা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্ম দিতে পারে।
জ্যামাইকার দক্ষিণাঞ্চলে ৯ থেকে ১৩ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস এবং ধ্বংসাত্মক ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা অবকাঠামো, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষতির কারণ হতে পারে। বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসও উদ্বেগজনক। জ্যামাইকা এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় হিস্পানিওলায় (হাইতি ও ডোমিনিকান রিপাবলিক) ১৫ থেকে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, কিছু স্থানীয় এলাকায় সর্বোচ্চ ৪০ ইঞ্চি পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যা মারাত্মক বন্যা ও ভূমিধসের কারণ হতে পারে। পূর্বাঞ্চলীয় কিউবার জন্য ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জ্যামাইকায় ৬৫০টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্র সক্রিয় করেছে এবং খাদ্য সামগ্রী মজুত করেছে। বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট বাতিল করেছে এবং মার্কিন নৌবাহিনী গুয়ান্তানামো বে ঘাঁটি থেকে অপ্রয়োজনীয় কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে, যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন স্তরের সমন্বয়কে নির্দেশ করে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সচেতনতা এবং দ্রুত পদক্ষেপই আগামী দিনের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে।
