ভারতীয় বিজ্ঞান জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার নিশ্চিত হয়েছে। বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (BSI) উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা আনুষ্ঠানিকভাবে বালসামের একটি নতুন প্রজাতিকে নথিভুক্ত করেছেন, যা পূর্বে বিজ্ঞানীদের কাছে অজ্ঞাত ছিল। এই প্রজাতিটির বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে *Impatiens rajibiana*।
এই বিরল পুষ্পটি অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম কামেং জেলার শেরগাঁওয়ের নিবিড়, অক্ষত বনভূমিতে খুঁজে পাওয়া যায়। বিএসআই-এর ডঃ কৃষ্ণা চৌলুর নেতৃত্বে একটি দল এই আবিষ্কারটি সম্পন্ন করে। এই অনুসন্ধানটি আবারও প্রমাণ করে যে পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য কতটা অসাধারণ; এই অঞ্চলটি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জীববৈচিত্র্যের 'হটস্পট' হিসেবে স্বীকৃত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু এই বৈজ্ঞানিক অবদানের জন্য ডঃ চৌলু এবং তাঁর দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
*Impatiens rajibiana*-এর আবিষ্কার এই অঞ্চলের জন্য কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সমান্তরালভাবে, তাওয়াং জেলার গবেষকরা আরও তিনটি নতুন অর্কিড প্রজাতির সন্ধান পেয়েছেন, যা অনন্য উদ্ভিদ জীবনের কেন্দ্র হিসেবে অরুণাচল প্রদেশের খ্যাতিকে আরও দৃঢ় করে। ভারতে নথিভুক্ত বালসাম প্রজাতির মোট সংখ্যা প্রায় ২৩০-এর কাছাকাছি পৌঁছেছে, যার মধ্যে ব্যাপকভাবে চাষ করা বাগান বালসাম *Impatiens balsamina*-ও অন্তর্ভুক্ত। তবে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পাওয়া অনেক প্রজাতিই স্থানীয় (এন্ডেমিক), যা শুধুমাত্র এই অঞ্চলেই বিদ্যমান এবং প্রায়শই অত্যন্ত সীমিত সংখ্যায় পাওয়া যায়।
পরিসংখ্যান এই প্রবণতাকে সমর্থন করে। শুধুমাত্র ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে অরুণাচল প্রদেশে বালসামের ১৬টিরও বেশি নতুন প্রজাতি নথিভুক্ত করা হয়েছিল। পূর্ব হিমালয় একাধিক জীব-ভৌগোলিক রাজ্যের মিলনস্থল হওয়ায় এখানে এক বিস্ময়কর সম্পদ দেখা যায়: প্রায় ৯০০০ প্রজাতির গাছপালা এখানে জন্মায়, যার মধ্যে ৩৫০০টি এন্ডেমিক। এই অঞ্চলের ভারতীয় অংশে ৫৮০০ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে, যার মধ্যে ২০০০টি সম্পূর্ণ অনন্য। এই অঞ্চলটি তুষার চিতা, বেঙ্গল টাইগার এবং এশিয়ান হাতির মতো আইকনিক প্রাণীদের জন্যও অভয়ারণ্য হিসেবে কাজ করে।
এই ধরনের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি কেবল তথ্য সংগ্রহের গুরুত্বকেই তুলে ধরে না, বরং এই আদিম প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলি সংরক্ষণের জন্য নিরন্তর, সচেতন মনোযোগের তীব্র প্রয়োজনীয়তাকেও নির্দেশ করে। প্রতিটি নতুন আবিষ্কার প্রকৃতির সূক্ষ্ম আন্তঃসম্পর্কের একটি শক্তিশালী অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য মানবজাতির দায়িত্বকে আরও শক্তিশালী করে।