মিজোরাম-মণিপুর সীমান্তে উত্তর খাওলেখ গ্রামের কাছে থিংকুয়াং গুহায় মানব কঙ্কালের অবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। এই আবিষ্কার রাজ্যের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারে। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ (INTACH)-এর মিজোরাম শাখা জানিয়েছে যে কার্বন-১৪ পরীক্ষার মাধ্যমে এই দেহাবশেষগুলি ১২৬০ থেকে ১৩২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেকার বলে প্রমাণিত হয়েছে, যা প্রায় ৭৫০ বছরেরও বেশি পুরনো। এই আবিষ্কারটি রাজ্যের সবচেয়ে প্রাচীন কঙ্কাল অবশেষের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
উত্তর খাওলেখ গ্রামের একজন গ্রামবাসী এই কঙ্কালগুলি খুঁজে পেয়েছেন। গুহাটি প্রায় ৫০ ফুট উঁচুতে একটি খাড়া পাহাড়ের উপরে অবস্থিত। এই আবিষ্কারের পর, INTACH মিজোরাম শাখা এই দেহাবশেষগুলির উপর একটি গভীর গবেষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মিজোদের ইতিহাসকে নতুনভাবে পরীক্ষা করতে সাহায্য করবে।
INTACH মিজোরামের কনভেনার রিন সাঙ্গা জানিয়েছেন যে নমুনাগুলি ১৩শ শতাব্দীর শেষ বা ১৪শ শতাব্দীর প্রথম দিকের। তিনি আরও বলেন যে এই দেহাবশেষগুলি মিজোরামে মিতোদের আগমনের প্রচলিত তত্ত্বের চেয়ে প্রায় ৪০০ বছর আগের এবং পূর্বের সবচেয়ে প্রাচীন দেহাবশেষ, যা পূর্ব মিজোরামের চাম্ফাই জেলার ওয়াংচিয়াতে পাওয়া গিয়েছিল (যা ১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দের), তার থেকেও প্রায় ২০০ বছর পুরনো।
এই আবিষ্কার মিজোরামের প্রাচীন বসতি স্থাপনকারীদের পরিচয় এবং উৎস সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য প্রদান করতে পারে। ডিএনএ সিকোয়েন্সিং-এর মতো আরও পরীক্ষাগুলি এই ব্যক্তিদের পরিচয় এবং তাদের পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে আলোকপাত করবে, যা মিজোরামের আদি বসতি স্থাপনকারীদের বংশগতি এবং অভিবাসন প্যাটার্ন সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে। এই গবেষণাগুলি মিজোরামের ঐতিহাসিক আখ্যানকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারটি মিজোরামের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং মানব ইতিহাসের গভীরে অনুসন্ধান করার সুযোগ করে দিয়েছে। এই ধরনের আবিষ্কারগুলি কেবল অতীতের প্রতি আমাদের বোঝাপড়াকেই সমৃদ্ধ করে না, বরং বর্তমান প্রজন্মের কাছেও আমাদের পূর্বপুরুষদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আলোকপাত করে।