১৯১১ সালে নেভাদার লোভেলক গুহায় খনি শ্রমিকরা মানব দেহাবশেষ আবিষ্কার করেন, যা 'লাল-চুলো দৈত্যদের' কিংবদন্তিকে উস্কে দেয়। বিশেষ করে পাইউট উপজাতির মুখে মুখে প্রচলিত এই গল্পে সি-তে-কাহ নামক এক নরখাদক দৈত্যের উল্লেখ আছে। পাইউটদের মৌখিক ইতিহাস অনুসারে, সি-তে-কাহ ছিল এক ভয়ংকর শত্রু যারা প্রতিবেশী উপজাতিদের সাথে যুদ্ধ করত এবং সম্মিলিত উপজাতিরা অবশেষে তাদের পরাজিত ও নির্মূল করে।
১৯১১ সালের খননকার্যে মমি করা দেহাবশেষ পাওয়া যায়, যার কিছু ৬.৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা ছিল এবং স্বতন্ত্রভাবে লাল চুল ছিল। তবে, পরবর্তী বিশ্লেষণগুলি দৈত্যদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রেডিওকার্বন ডেটিং অনুসারে, লোভেলক গুহায় প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মানুষের বসতি ছিল। এই সময়কাল গড় উচ্চতার চেয়ে বেশি লম্বা কোনো ব্যক্তির উপস্থিতি সমর্থন করে না। নৃবিজ্ঞানী অ্যাড্রিয়েন মেয়র মনে করেন যে, প্রাথমিক খননকারীরা ভুলবশত ম্যামথ বা প্রাগৈতিহাসিক ভাল্লুকের হাড়কে মানব দেহাবশেষ ভেবে থাকতে পারেন। চুলের লালচে আভা পরিবেশগত কারণের ফলেও হতে পারে, যা দেহাবশেষের সংরক্ষণে প্রভাব ফেলে।
যদিও সি-তে-কাহ কিংবদন্তি পাইউটদের মৌখিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, বর্তমান প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ আমেরিকায় লাল-চুলো দৈত্যদের জাতির অস্তিত্ব নিশ্চিত করে না। লোভেলক গুহার আবিষ্কারগুলি গ্রেট বেসিন অঞ্চলের প্রাগৈতিহাসিক অধিবাসীদের সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। তবে, এগুলি নেটিভ আমেরিকান লোককাহিনীতে পাওয়া দৈত্যদের আখ্যানকে বৈধতা দেয় না। লোভেলক গুহার 'লাল-চুলো দৈত্যদের' গল্পটি দেখায় কিভাবে মৌখিক ঐতিহ্য এবং প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলি স্থায়ী কিংবদন্তিতে মিশে যেতে পারে।
আধুনিক গবেষণা এবং বিশ্লেষণ এই প্রাচীন দেহাবশেষগুলির একটি সূক্ষ্মতর বোঝাপড়া প্রদান করে, যা এখন অঞ্চলের পরিচিত ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে স্থাপন করা হয়েছে। অতিরিক্ত তথ্যে জানা যায় যে, লোভেলক গুহা প্রায় ৪,০০০ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, এবং এখানে প্রাপ্ত স্যান্ডেলগুলি প্রায় ১০,০০০ বছরের পুরনো, যা নেভাদার প্রাচীনতম জুতাগুলির মধ্যে অন্যতম। কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক এবং নৃতাত্ত্বিক গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে, কিছু দেহাবশেষের অস্বাভাবিক উচ্চতা হয়তো ভুল ব্যাখ্যা বা পরিবেশগত কারণে হতে পারে। চুলের লালচে রঙও মৃতদেহের রাসায়নিক পরিবর্তনের ফল হতে পারে, যা স্বাভাবিক। তবে, এই কিংবদন্তিগুলি আজও মানুষের কল্পনাকে আকর্ষণ করে এবং প্রাচীন ইতিহাস ও লোককথার মেলবন্ধনকে তুলে ধরে।