জাপানের আকাশে বিরল উল্কাপিণ্ড, যা 'ফায়ারবল' নামে পরিচিত

সম্পাদনা করেছেন: Tasha S Samsonova

২০২৫ সালের ২০শে আগস্টের রাতে জাপানের আকাশ এক অসাধারণ মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছিল। কাগোশিমা, মিয়াজাকি, ওসাকা এবং কিউশু ও শিকোকু অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে এক উজ্জ্বল উল্কাপিণ্ড, যা 'ফায়ারবল' নামে পরিচিত, আকাশ আলোকিত করে তুলেছিল। স্থানীয় সময় রাত প্রায় ১১:১০ মিনিটে, এই মহাজাগতিক বস্তুটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এক অভূতপূর্ব আলোর ঝলকানি সৃষ্টি করে, যা রাতের আকাশকে কিছুক্ষণের জন্য দিনের আলোয় রূপান্তরিত করেছিল। ঘটনাটি বিভিন্ন নজরদারি ক্যামেরা এবং গাড়ির ড্যাশ ক্যামেরাতেও ধরা পড়ে, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই 'ফায়ারবল' ছিল একটি ব্যতিক্রমী উজ্জ্বল উল্কাপিণ্ড। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুক ডালির ব্যাখ্যা অনুসারে, ফায়ারবল হলো সাধারণ উল্কাপিণ্ডের চেয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল এবং দীর্ঘস্থায়ী। এটি মহাকাশীয় বস্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে উচ্চ গতিতে প্রবেশ করার সময় বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে উৎপন্ন হয়। হিরাতসুকা সিটি মিউজিয়ামের ফায়ারবল বিশেষজ্ঞ দাইচি ফুজির মতে, এই উল্কাপিণ্ডটি প্রায় ২১ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড গতিতে প্রবেশ করেছিল এবং সম্ভবত কিউশুর দক্ষিণে সমুদ্রে পতিত হয়েছে। বস্তুটি উল্কাপিণ্ডের চেয়ে বড়, প্রায় মুষ্টিবদ্ধ হাত থেকে বাস্কেটবল আকারের হতে পারে, এবং এটি একটি গ্রহাণুর অংশ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এই মহাজাগতিক ঘটনার সময়, কাগোশিমা এবং হিয়োকি অঞ্চলের কিছু বাসিন্দা একটি বিস্ফোরণের মতো শব্দ শোনার খবর জানিয়েছেন, যা 'সনিক বুম' নামে পরিচিত। এটি ঘটে যখন উল্কাপিণ্ড শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। যদিও এই সময়টি পার্সেইডস উল্কাবৃষ্টির (Perseids meteor shower) সক্রিয়তার সময়, যা সাধারণত জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত দেখা যায় এবং যার সর্বোচ্চ পর্যায় ১২-১৩ আগস্টের কাছাকাছি থাকে, তবে এই ধরনের উজ্জ্বল ফায়ারবল বছরে একবারই দেখা যায়। এর আগে, ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ তারিখে অ্যান্টার্কটিকার ভোস্টক স্টেশনের উপর দিয়ে একটি উজ্জ্বল উল্কাপিণ্ড উড়ে গিয়েছিল, যা প্রায় ৩০ মিনিট ধরে আকাশে একটি সাদা রেখা রেখে গিয়েছিল।

এই ঘটনাটি জাপানের বিভিন্ন প্রান্তে লক্ষ লক্ষ মানুষকে মুগ্ধ করেছে। এটি প্রকৃতির এক অসাধারণ প্রদর্শনী ছিল, যা মহাবিশ্বের বিশালতা এবং আমাদের গ্রহের সুরক্ষামূলক বায়ুমণ্ডলের কার্যকারিতা স্মরণ করিয়ে দেয়। এই উজ্জ্বল উল্কাপিণ্ডের কারণে কোনও আঘাত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, যা এই মহাজাগতিক অতিথির একটি শান্তিপূর্ণ আগমনের ইঙ্গিত দেয়। এই ঘটনাটি কেবল একটি জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত বিস্ময়ই ছিল না, বরং এটি ছিল এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা যা মানুষকে প্রকৃতির মহত্ত্বের সাথে একাত্ম হওয়ার এক বিরল সুযোগ করে দিয়েছিল।

উৎসসমূহ

  • ������.Ru

  • В Японии заметили загадочный светящийся шар в небе - РИА Новости

  • В небе над Японией заметили падение «огненного шара» - Газета.Ru

  • В Японии сообщили о падении загадочного светящегося шара | Аргументы и Факты

  • В небе над Японией заметили таинственный огненный шар

  • «Огненные шары» в небе над Японией попали на видео: погодных аномалий не выявлено | РБК Life

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।