পৃথিবীর বৃহত্তম হিমবাহ A-23a, যা বর্তমানে দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপের কাছাকাছি অবস্থান করছে, তা নিয়ে বৈজ্ঞানিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এই দ্বীপটি পেঙ্গুইন এবং সিলের মতো সামুদ্রিক বন্যপ্রাণীর একটি বিশাল আবাসস্থল। হিমবাহটির নৈকট্য সেখানকার প্রাণীদের খাদ্য সংগ্রহের স্থানগুলিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১৯৮৬ সালে ফিলচনার বরফ স্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া A-23a প্রায় তিন দশক ধরে ওয়েডেল সাগরে আটকে ছিল। ২০২০ সালে এটি উত্তর দিকে সরতে শুরু করে এবং ২০২৪ সালে দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপের কাছে একটি শক্তিশালী স্রোতে পুনরায় আটকে যায়। অবশেষে, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর নাগাদ A-23a মুক্ত হয়ে দ্বীপটির দিকে যাত্রা অব্যাহত রাখে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, হিমবাহটি দ্বীপ থেকে প্রায় ২৮০ কিলোমিটার দূরে ছিল এবং অগভীর জলের নিচে আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল, যা স্থানীয় সামুদ্রিক প্রাণীদের খাদ্য সংগ্রহের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারত। ২০২৫ সালের মার্চ নাগাদ, হিমবাহটি দ্বীপ থেকে প্রায় ৭৩ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রে অবস্থান করছিল, যা স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রাথমিকভাবে A-23a-এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও, সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণগুলি ইঙ্গিত দেয় যে হিমবাহটি স্থিতিশীল হয়েছে এবং স্থানীয় বন্যপ্রাণীর জন্য তাৎক্ষণিক হুমকি সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে না। উপরন্তু, A-23a-এর উপস্থিতি জলবায়ু পরিবর্তনের উপর বড় হিমবাহের প্রভাব নিয়ে গবেষণার নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। বিজ্ঞানীরা এই ধরনের ঘটনাগুলির সামুদ্রিক পরিবেশে প্রভাব সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য এবং অ্যান্টার্কটিকার জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদী পরিণতিগুলি মূল্যায়ন করার জন্য A-23a-এর গতিপথ পর্যবেক্ষণ করছেন।
এর আগে, A-68A নামক একটি বিশাল হিমবাহ, যা প্রায় গ্রেটার লন্ডনের চারগুণ আকারের ছিল, দক্ষিণ জর্জিয়ার উপকূলে ভেঙে যাওয়ার সময় সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে প্রভাবিত করেছিল। যখন A-68A গলে যাচ্ছিল, তখন এটি জলের স্তরকে পুনর্গঠিত করেছিল, পৃষ্ঠে গলিত জল নিচের স্তরগুলিকে ঠেলে দিয়েছিল। এই প্রক্রিয়াটি প্ল্যাঙ্কটন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানগুলিকে পুনরায় বিতরণ করেছিল, যা সামুদ্রিক জীবনের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছিল। এই ঘটনাগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে বরফের বড় খণ্ডগুলির প্রভাব সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য প্রদান করে।