মার ডেল প্লাটা, আর্জেন্টিনা – আর্জেন্টিনার বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের মার ডেল প্লাটা সাবমেরিন ক্যানিয়ন অন্বেষণ করে প্রায় ৪০টি নতুন সামুদ্রিক প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। আর্জেন্টিনার জাতীয় বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত গবেষণা কাউন্সিল (CONICET) এবং স্কটমিট ওশান ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে, গবেষণা জাহাজ R/V ফ্যালকোর (too) থেকে পরিচালিত রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকেল (ROV) SuBastian ৩,৯০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত নেমে সমুদ্রের গভীরে পূর্বে অজানা সামুদ্রিক জীবনের সন্ধান পায়।
এই অভিযানটি জনসাধারণের মধ্যে গভীর সমুদ্রের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। SuBastian ROV-এর লাইভ সম্প্রচার ইউটিউবে প্রতিদিন ১.৬ মিলিয়নেরও বেশি দর্শক আকর্ষণ করেছে, এবং কিছু ডাইভের সময় ৫০,০০০ দর্শক একযোগে সম্প্রচারটি দেখেছেন। এই সম্প্রচারগুলিতে কমলা রঙের তারা মাছ, স্বচ্ছ স্কুইড এবং গভীর সমুদ্রের কাঁকড়ার মতো বিভিন্ন ধরণের সামুদ্রিক জীবের ছবি দেখানো হয়েছে, যার মধ্যে অনেক প্রজাতি পূর্বে অজানা ছিল। গবেষকরা ৩,৫০০ মিটারের বেশি গভীরতায় শীতল জলের প্রবাল প্রাচীরগুলিও নথিভুক্ত করেছেন, যা দক্ষিণ আটলান্টিকের গভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র এবং জীববৈচিত্র্য বোঝার ক্ষেত্রে মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করেছে।
অভিযানটি গভীর সমুদ্রের পরিবেশগত সমস্যাগুলিও তুলে ধরেছে। দলটি ১,২০০ মিটারের বেশি গভীরতায় প্লাস্টিক বর্জ্য সনাক্ত করেছে, যা সামুদ্রিক দূষণের গুরুতর সমস্যাটিকে আবারও সামনে এনেছে। এই ধরনের দূষণ গভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং সামুদ্রিক জীবনের জন্য একটি বড় হুমকি।
এই মিশনের মাধ্যমে সংগৃহীত ডেটা CONICET Digital, OBIS, এবং GenBank-এর মতো উন্মুক্ত-অ্যাক্সেস ভান্ডারগুলিতে উপলব্ধ করা হবে, যা বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় এবং জনসাধারণের জন্য এই আবিষ্কারগুলি থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দেবে। এই অভিযানটি কেবল বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকেই এগিয়ে নিয়ে যায়নি, বরং আর্জেন্টিনা এবং বিশ্বজুড়ে গভীর সমুদ্রের বিস্ময়গুলির সাথে জনগণের সংযোগকেও গভীর করেছে এবং সামুদ্রিক সংরক্ষণের গুরুত্বকে আরও একবার তুলে ধরেছে।