২০০৮ সালে আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাচীন বন্দরে ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিক ফ্র্যাঙ্ক গডিওর দল একটি সিরামিক বাটি আবিষ্কার করে, যা 'যিশু কাপ' নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রথম শতাব্দীর এই বাটিতে গ্রিক ভাষায় একটি শিলালিপি রয়েছে: 'DIA CHRSTOU O GOISTAIS', যার সম্ভাব্য অর্থ 'খ্রিস্টের মাধ্যমে গায়ক' বা 'খ্রিস্টের দ্বারা জাদুকর'।
নিউ টেস্টামেন্ট পণ্ডিত ডঃ জেরেমিয়া জনস্টন এই প্রত্নবস্তুটির তাৎপর্য তুলে ধরেছেন। তিনি মনে করেন, এটি যিশুকে নিরাময়কারী এবং অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে তার খ্যাতির প্রমাণ বহন করে। আলেকজান্দ্রিয়ার প্রেক্ষাপট, যেখানে পৌত্তলিক, ইহুদি এবং খ্রিস্টান ঐতিহ্যের মিলন ঘটেছিল, সেখানে খ্রিস্টের নাম জাদুবিদ্যার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে তিনি ধারণা করেন।
তবে, এই শিলালিপির ব্যাখ্যা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পণ্ডিত বার্ট স্মিথের মতো কেউ কেউ মনে করেন যে শিলালিপিটি 'ক্রেস্টোস' নামক একজন ব্যক্তি বা কোনো দেবতাকে নির্দেশ করতে পারে, যার অর্থ 'দয়ালু' বা 'ভালো'। এই মতানুসারে, বাটিটি কোনো জাদুকরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হত। অন্যরা, যেমন গিয়র্গি নেমেথ, এটিকে একটি অভিষেক মলমের সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করেন।
যদি এটি যিশু খ্রিস্টের উল্লেখ বলে নিশ্চিত হয়, তবে 'যিশু কাপ' খ্রিস্টীয় ধর্মগ্রন্থের বাইরে তার অস্তিত্বের প্রাচীনতম বস্তুগত প্রমাণ হতে পারে। ফ্র্যাঙ্ক গডিও ১৯৯২ সাল থেকে আলেকজান্দ্রিয়ার পূর্ব বন্দরে জলের নীচে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা করছেন এবং তার দল প্রায় ৪০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে জরিপ চালিয়ে পলির নিচে চাপা পড়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন শনাক্ত করেছে। এই আবিষ্কারগুলি প্রাচীন আলেকজান্দ্রিয়ার ঐশ্বর্য এবং এর ঐতিহাসিক গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
এই মতভেদ সত্ত্বেও, 'যিশু কাপ' প্রত্নতত্ত্ব এবং প্রাথমিক খ্রিস্টধর্মের অধ্যয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়। এর সঠিক তাৎপর্য নির্ণয়ের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।