১৪৫৮ সালে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা হ্রাসের যে উল্লেখযোগ্য প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তার সঙ্গে একটি বিশাল আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের দৃঢ় সংযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ভানুয়াতুর সমুদ্রের নিচে অবস্থিত কুওয়ায়ে আগ্নেয়গিরিকে এই ঘটনার উৎস হিসেবে জোরালোভাবে সমর্থন করছে। এই সুদূর অতীতের বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগের প্রমাণ গ্রিনল্যান্ড থেকে অ্যান্টার্কটিকা পর্যন্ত বিস্তৃত বরফের কোরগুলির মধ্যে সংরক্ষিত সালফার ডাই-অক্সাইডের রাসায়নিক স্বাক্ষরের মাধ্যমে পাওয়া গেছে। এটি প্রমাণ করে যে এই ধরনের ভূতাত্ত্বিক ঘটনার প্রভাব কত দ্রুত এবং কতদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল অ্যান্টার্কটিকার বরফ থেকে উদ্ধার করা আণুবীক্ষণিক আগ্নেয় কাঁচের টুকরাগুলি, যা অগ্ন্যুৎপাতের উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করার জন্য একটি নির্ভুল ভূতাত্ত্বিক নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। যদিও এপি এবং টোঙ্গোয়া দ্বীপপুঞ্জের মাঝখানে অবস্থিত কুওয়ায়ে আগ্নেয়গিরিটি দীর্ঘদিন ধরে প্রধান সন্দেহভাজন ছিল—যার ক্যালডেরা-গঠনকারী কার্যকলাপ আনুমানিক ১৪৫২ খ্রিস্টাব্দে ঘটেছিল—তবুও পূর্বে একটি বিকল্প তত্ত্ব ছিল। কিছু ভূতাত্ত্বিক সাদৃশ্যের কারণে চিলির প্যাটাগোনিয়ার মাউন্ট রেক্লাসকেও এই ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছিল।
তবে, অ্যান্টার্কটিকার বরফের কোর নমুনার উপর ২০২৩ সালে পরিচালিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ এই উৎস নির্ধারণে চূড়ান্ত মোড় এনে দেয়। এই গবেষণায় দেখা গেছে যে উদ্ধারকৃত কাঁচের টুকরাগুলির সঙ্গে কুওয়ায়ে আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত পদার্থের পরিচিত রাসায়নিক গঠনের অনেক বেশি শক্তিশালী মিল রয়েছে। এই আবিষ্কারটি ১৪৫৮ সালে উত্তর গোলার্ধ জুড়ে অনুভূত হওয়া ব্যাপক জলবায়ুগত অস্বাভাবিকতার মূল কারিগর হিসেবে কুওয়ায়েকে চিহ্নিত করার পক্ষে যুক্তিকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করেছে।
গবেষণায় কাঁচের টুকরাগুলির মধ্যে একটি বিস্তৃত রাসায়নিক গঠনের বৈচিত্র্যও লক্ষ্য করা গেছে, যা কেবল একটি একক, অখণ্ড অগ্ন্যুৎপাতের চেয়ে আরও জটিল বাস্তবতার ইঙ্গিত দেয়। এই সূক্ষ্ম জটিলতা থাকা সত্ত্বেও, বর্তমান বৈজ্ঞানিক ঐকমত্য দৃঢ়ভাবে কুওয়ায়ে আগ্নেয়গিরিকেই ব্যাপক বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগের সবচেয়ে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে নির্দেশ করে। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে সালফারের এত বৃহৎ পরিমাণে প্রবেশ পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা কৃষি ফলন থেকে শুরু করে সমাজের স্থিতিশীলতা পর্যন্ত সবকিছুকে প্রভাবিত করতে পারে।
গভীর বরফের রেকর্ডের মাধ্যমে এই প্রাচীন বায়ুমণ্ডলীয় প্রভাবগুলিকে খুঁজে বের করার ক্ষমতা আধুনিক জলবায়ু বিজ্ঞানের জন্য অমূল্য তথ্য সরবরাহ করে। ১৪৫৮ সালের ঘটনার উৎস নিশ্চিত করার মাধ্যমে, গবেষকরা পৃথিবীর সিস্টেমগুলির আন্তঃসংযুক্ততা এবং আকস্মিক, শক্তিশালী প্রাকৃতিক ঘটনাগুলির প্রতি বিশ্ব পরিবেশের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে আরও গভীর উপলব্ধি লাভ করেন। এটি আমাদের গ্রহের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের গতিপথ বোঝার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।