মার্কিন শুল্কের ধাক্কায় ভারতীয় শেয়ার বাজার, বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ তুঙ্গে
সম্পাদনা করেছেন: Olga Sukhina
২৮ আগস্ট, ২০২৫ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নতুন শুল্কের প্রভাবে ভারতীয় শেয়ার বাজারে আজ বড় ধরনের পতন লক্ষ্য করা গেছে। बीएसই সেনসেক্স ০.৫৯% কমে ৮০,৩১৫.২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে এবং নিফটি ৫০ সূচক ০.৫১% হ্রাস পেয়ে ২৪,৫৪৩.৭৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এই পতন বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য উত্তেজনার ক্রমবর্ধমান উদ্বেগকে প্রতিফলিত করছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক ২৫% থেকে বাড়িয়ে ৫০% করেছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখাকে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় সংস্থাগুলির বাজার মূলধনেও প্রভাব পড়েছে। बीएसই-তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির বাজার মূলধন প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা কমে ৪৪৭ লক্ষ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা পূর্বের ৪৪৯ লক্ষ কোটি টাকা থেকে কম।
বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্কবৃদ্ধি বিশেষত রপ্তানি-নির্ভর ক্ষেত্রগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করবে। ভারতীয় বস্ত্র, চামড়া, রত্ন ও গয়না, এবং সামুদ্রিক খাদ্য শিল্পের মতো রপ্তানি-প্রধান খাতগুলি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই দেশগুলির রপ্তানি প্রায় ৭০% পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। অন্যদিকে, ফার্মাসিউটিক্যালস, ইলেকট্রনিক্স, এবং পেট্রোলিয়াম পণ্যের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাত এই শুল্কের আওতার বাইরে থাকায় কিছুটা স্বস্তিতে আছে।
এই পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিদেশী পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (FPIs) এই বাজার পতনের মধ্যে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ তুলে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছে। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (WTO) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা, রপ্তানি বাজারকে বৈচিত্র্যময় করা এবং নতুন বাণিজ্য চুক্তি স্থাপন করা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে 'ভোকাল ফর লোকাল' অর্থাৎ দেশীয় পণ্য ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন, যা আত্মনির্ভরতার উপর জোর দিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই শুল্কের তাৎক্ষণিক প্রভাব সীমিত হলেও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ভারতীয় অর্থনীতির উপর গভীর হতে পারে। এই শুল্কের ফলে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধিতে প্রায় এক শতাংশ পর্যন্ত প্রভাব পড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার রপ্তানি প্রচার মিশন (Export Promotion Mission) এর অধীনে ২৫,০০০ কোটি টাকার একটি সহায়তা প্যাকেজ তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা রপ্তানিকারকদের জন্য ঋণ এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করবে। এছাড়াও, সরকার নতুন বাজার অনুসন্ধানের উপর জোর দিচ্ছে এবং ৪০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এই পদক্ষেপগুলি ভারতীয় অর্থনীতিকে বিশ্ব বাজারের অস্থিরতা থেকে রক্ষা করতে এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উৎসসমূহ
mint
Reuters
Reuters
Reuters
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
