আগস্ট ২০২৫-এর শুরু থেকে অপরিশোধিত তেলের দাম ১১%-এর বেশি কমেছে, যা বাজারকে বেয়ার মার্কেটে (bear market) প্রবেশ করিয়েছে। এই দরপতনের প্রধান কারণ হলো ওপেক+ (OPEC+) দেশগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি। ওপেক+ (OPEC+) এর আটটি প্রধান সদস্য দেশ আগস্ট ২০২৫-এ সম্মিলিতভাবে দৈনিক ৫৪৮,০০০ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এই পদক্ষেপটি পূর্বের উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার একটি ত্বরান্বিত প্রক্রিয়া, যার লক্ষ্য হলো স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কম মজুদের মধ্যে বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখা।
ভূ-রাজনৈতিক কারণগুলোও তেলের দামকে প্রভাবিত করছে। রাশিয়া, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনার প্রত্যাশা রুশ তেলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ এবং মূল্যের উপর আরও প্রভাব ফেলতে পারে। মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (EIA) পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০২৫ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের গড় দাম ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলারের নিচে থাকবে। এটি ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো দামের এই স্তরে নেমে আসা, যা বিশ্বব্যাপী তেলের সরবরাহে উদ্বৃত্তের ইঙ্গিত দেয়।
অন্যদিকে, প্রধান শেয়ারবাজার সূচকগুলো স্থিতিশীলতা দেখাচ্ছে। এসপিডিআর এসএন্ডপি ৫০০ ইটিএফ ট্রাস্ট (SPDR S&P 500 ETF Trust) বা SPY $৬৪৩.৯৬-এ লেনদেন হচ্ছে, যা ০.০০১০৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে, আইশেয়ার্স এমএসসিআই এসিউআই ইটিএফ (iShares MSCI ACWI ETF) বা ACWI $১৩৩.৫৩-এ লেনদেন হচ্ছে, যা ০.০০৯০০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ মনোভাবের প্রতিফলন।
ঐতিহাসিকভাবে, তেলের বাজারে এমন দরপতন দেখা গেছে যখন সরবরাহ চাহিদা ছাড়িয়ে যায়। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তেলের দাম একটি বেয়ার মার্কেটে ছিল, যা মূলত সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে ঘটেছিল। বর্তমান পরিস্থিতিও একই ধরনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে ওপেক+ এর উৎপাদন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য কারণগুলো তেলের দামকে নিম্নমুখী করছে। এই পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে, যেখানে তেল আমদানিকারক দেশগুলো লাভবান হলেও রপ্তানিকারক দেশগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।