আগস্ট ১৮, ২০২৫ তারিখে জাপানের শেয়ার বাজার এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে, যেখানে নিক্কেই ২৫৫ সূচক ৪৩,৬৮৩.৫৬-এ পৌঁছে সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড স্থাপন করেছে। এই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি সূচকে ০.৭% এর একটি ইতিবাচক পরিবর্তন নির্দেশ করে। একই সাথে, টপিক্স সূচকও ০.৫৮% বৃদ্ধি পেয়ে ৩,১২৫.৬-এ পৌঁছে নতুন রেকর্ড গড়েছে। এই বাজার উত্থানের পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে জাপানের গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির শেয়ারের ঊর্ধ্বগতি এবং দেশটির মুদ্রার দুর্বল ইয়েন। ইয়েনের অবমূল্যায়ন জাপানের রপ্তানি-নির্ভর সংস্থাগুলির জন্য একটি শক্তিশালী ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে, টয়োটা এবং হোন্ডার মতো প্রধান গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির শেয়ার যথাক্রমে ১.৫৮% এবং ১.২২% বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্বল ইয়েন জাপানি পণ্যগুলিকে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে এবং বিদেশী আয়কে ইয়েনে রূপান্তরের সময় এর মূল্য বৃদ্ধি করে। এই প্রবণতাটি ২০২৩ সাল থেকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যেখানে ২০২৫ সালের আগস্ট নাগাদ USD/JPY ১৪৭.৩৮৮০-এ পৌঁছেছে, যা জাপানের অতি শিথিল মুদ্রানীতি এবং ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার বৃদ্ধির নীতির ভিন্নতার কারণে ঘটেছে। এই মুদ্রা-চালিত সুবিধাগুলি গাড়ি প্রস্তুতকারকদের মুনাফা বৃদ্ধিতে সরাসরি সহায়তা করছে।
জাপানের বাজারের এই ইতিবাচক গতি কেবল অভ্যন্তরীণ কারণগুলির উপর নির্ভরশীল নয়, বরং এটি বৃহত্তর এশীয় বাজারের ইতিবাচক প্রবণতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথেও সঙ্গতিপূর্ণ। প্রত্যাশিত বৈশ্বিক সুদের হার হ্রাস এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনের আশা, যেমন আমেরিকা-চীন শুল্ক চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়িয়েছে। এই বিষয়গুলি সামগ্রিকভাবে জাপানি স্টকগুলিতে বিদেশী বিনিয়োগের প্রবাহকে উৎসাহিত করেছে। টোকাই টোকিও ইন্টেলিজেন্স ল্যাবরেটরির প্রধান ইকুইটি মার্কেট বিশ্লেষক সেইচি সুজুকি বলেছেন, "অভ্যন্তরীণ ইক্যুইটিগুলি গত সপ্তাহের গতি ধরে রেখেছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা জাপানি স্টক কেনা অব্যাহত রাখবে এমন প্রত্যাশা ছিল।" তবে, বাজারের সকল অংশ সমানভাবে লাভবান হয়নি। ব্যাংকিং খাত এবং কিছু প্রযুক্তি-সম্পর্কিত শেয়ারের পতন দেখা গেছে। প্রধান ব্যাংকগুলি, যেমন মিতসুবিশি ইউএফজে ফিনান্সিয়াল গ্রুপ এবং সুমিতোমো মিতসুই ফিনান্সিয়াল গ্রুপ, যথাক্রমে ১.৯৬% এবং ১.৭৮% হ্রাস পেয়েছে। একইভাবে, টোকিও ইলেকট্রন এবং অ্যাডভান্টেস্টের মতো চিপ-সম্পর্কিত সংস্থাগুলিও কিছুটা চাপের সম্মুখীন হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখন আসন্ন জ্যাকসন হোল সিম্পোজিয়ামের দিকে তাকিয়ে আছে, যেখানে ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি পাওয়া যাবে। এই সিম্পোজিয়ামের ফলাফল বৈশ্বিক মুদ্রানীতির ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এবং জাপানি বাজারের উপরও এর প্রভাব পড়বে।