ভারতীয় শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রবণতা: তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উত্থান এবং অন্যান্য খাতের উপর প্রভাব
সম্পাদনা করেছেন: Olga Sukhina
২০২৫ সালের ২০শে আগস্ট, ভারতীয় শেয়ার বাজার একটি মিশ্র চিত্র প্রদর্শন করেছে। সেনসেক্স ২১৩.৪৫ পয়েন্ট বেড়ে ৮১,৮৫৭.৮৪ এ পৌঁছেছে, এবং নিফটিও ৪৯.৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ২৫,০৫০.৫৫ এ শেষ হয়েছে। এই উত্থানের প্রধান কারণ তথ্যপ্রযুক্তি (IT) খাতের শক্তিশালী পারফরম্যান্স, বিশেষ করে ইনফোসিস (Infosys) এবং টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS)-এর মতো বড় কোম্পানিগুলির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি। ইনফোসিসের শেয়ার ৩.৩১% বেড়ে ১৭.১৫ টাকায় লেনদেন হয়েছে, এবং টিসিএস-এর শেয়ার ২.৬৯% বেড়েছে। এছাড়াও, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, एनटीपीसी, টাটা স্টিল, টেক মাহিন্দ্রা, আইটিসি এবং এইচসিএল টেক-এর মতো প্রধান কোম্পানিগুলিও তাদের ইতিবাচক ধারা বজায় রেখেছে।
তবে, বাজারের সামগ্রিক চিত্রে কিছু খাতের উপর পতন লক্ষ্য করা গেছে। ইলেকট্রনিক্স, অটো ফাইন্যান্স, অটোমোবাইল নির্মাতা এবং ট্রেন সম্পর্কিত স্টকগুলিতে পতন দেখা গেছে। এই মিশ্র প্রবণতার মধ্যে, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শক্তিশালী পারফরম্যান্স বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক দিক নির্দেশ করছে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিতে একটি স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।
বিনিয়োগকারীদের জন্য, পণ্য ও পরিষেবা কর (GST) হার পরিবর্তনের সম্ভাবনা এবং রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) আসন্ন মুদ্রানীতি পর্যালোচনার উপর নজর রাখা গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্তৃক দীপাবলির আগে জিএসটি সংস্কারের ঘোষণা, যা প্রায় ২.৪ লক্ষ কোটি টাকার চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অটোমোবাইল এবং ভোগ্যপণ্য খাতের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে। এই সংস্কারগুলি প্রায় ৯৯% পণ্যকে ১২% স্ল্যাব থেকে ৫% স্ল্যাবে এবং প্রায় ৯০% পণ্যকে ২৮% স্ল্যাব থেকে ১৮% স্ল্যাবে নিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য দাম কমাতে এবং চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।
বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের (FPIs) কার্যকলাপও বাজারের গতিপ্রকৃতিকে প্রভাবিত করছে। আগস্টের প্রথম অর্ধেকের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা প্রায় ২১,০০০ কোটি টাকার ভারতীয় ইক্যুইটি বিক্রি করেছে, যা মার্কিন-ভারত বাণিজ্য উত্তেজনা, দুর্বল প্রথম ত্রৈমাসিক কর্পোরেট আয় এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে হয়েছে। তবে, এসএন্ডপি কর্তৃক ভারতের রেটিং আপগ্রেড এবং ট্রাম্প-পুতিনের ইউক্রেন সংক্রান্ত সমঝোতার মতো বিষয়গুলি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে পারে।
রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার মুদ্রানীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা বাজারের গতিপথ নির্ধারণে সহায়ক। যদিও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবং স্থিতিশীল মুদ্রার কারণে সুদের হার অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, তবুও উৎসবের মরসুমে চাহিদা বৃদ্ধির জন্য সুদের হার কমানোর একটি প্রত্যাশাও রয়েছে। এই নীতিগত সিদ্ধান্তগুলি ব্যাংক, এনবিএফসি, রিয়েল এস্টেট এবং অটোমোবাইল খাতের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে তারা যেন বর্তমান বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং যেকোনো সম্ভাব্য জিএসটি হার সংশোধনের দিকে খেয়াল রেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। যৌক্তিক বিনিয়োগের উপর জোর দেওয়া উচিত, ফটকাবাজি এড়িয়ে চলা উচিত।
উৎসসমূহ
ndtv.in
Moneycontrol - Sensex
Moneycontrol - Nifty
Moneycontrol - Infosys Ltd
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
