২০২৫ সালের জুন মাস নাগাদ, বাইন্যান্স বিশ্বব্যাপী ক্রিপ্টোকারেন্সি স্পট ট্রেডিং মার্কেটে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেছে, মার্কেট শেয়ারের ৪১.১৪% অর্জন করেছে। গত ১২ মাসের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ মার্কেট শেয়ার। বিশেষ করে বিটকয়েন (BTC) মার্কেটে বাইন্যান্সের আধিপত্য স্পষ্ট, যেখানে তাদের মার্কেট শেয়ার ৪৫.৬%-এ পৌঁছেছে, যা ২০২৪ সালের জুলাই মাসের পর সর্বোচ্চ। এছাড়াও, ২০২৫ সালের মার্চ মাস থেকে বাইন্যান্স ধারাবাহিকভাবে ইথেরিয়াম (ETH) স্পট ট্রেডিংয়ে ৫০% মার্কেট শেয়ার বজায় রেখেছে, যা মাঝে মাঝে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই সময়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে সামগ্রিক কার্যকলাপ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে, শীর্ষ ১০টি এক্সচেঞ্জের মোট স্পট ট্রেডিং ভলিউম ২১.৭% কমেছে। বাইন্যান্সের মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধির পেছনে বেশ কয়েকটি কারণকে দায়ী করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাইবিট (Bybit) এক্সচেঞ্জে ঘটে যাওয়া প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলারের একটি বড় হ্যাকের পর বাইবিট-এর গ্রাহকদের বাইন্যান্সে স্থানান্তর। এই হ্যাকটি ছিল ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতে এ যাবৎকালের বৃহত্তম হ্যাকগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং এফবিআই (FBI) এটিকে উত্তর কোরিয়ার সাথে যুক্ত করেছে।
এছাড়াও, বাইন্যান্সের নতুন আলফা প্ল্যাটফর্ম (Alpha platform) এবং এর গ্যামিফাইড রিওয়ার্ড সিস্টেম, আলফা পয়েন্টস (Alpha Points), ব্যবহারকারীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে সহায়ক হয়েছে বলে জানা গেছে। ২০২৫ সালের শুরুতে, বাইন্যান্স টিথার (USDT) এবং ইউএসডিসি (USDC) মিলিয়ে ৩১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ নিশ্চিত করেছে, যা শীর্ষ ২০টি ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে মোট স্টেবলকয়েন ভলিউমের প্রায় ৫৯%। এই রিজার্ভের পরিমাণ বাইন্যান্সের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং গ্রাহকদের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
বাইন্যান্সের এই শক্তিশালী অবস্থান ক্রিপ্টো মার্কেটে তাদের নেতৃত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করছে। বাইন্যান্সের এই মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধি এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় তাদের শক্তিশালী অবস্থান, বিশেষ করে যখন সামগ্রিক বাজার মন্দার সম্মুখীন, তখন এটি তাদের কৌশলগত দৃঢ়তা এবং বাজার পরিচালনার দক্ষতার পরিচয় দেয়। আলফা প্ল্যাটফর্ম এবং আলফা পয়েন্টস-এর মতো উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলো ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে এবং ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে, বাইবিট হ্যাকের মতো ঘটনাগুলো বাজারের অস্থিরতা এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির উপর আলোকপাত করে, যা পরোক্ষভাবে বাইন্যান্সের মতো স্থিতিশীল প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি গ্রাহকদের আস্থা বাড়াতে পারে।