সাম্প্রতিক সময়ে বিটকয়েনের মূল্যে একটি উল্লেখযোগ্য পতন দেখা গেছে, যা $113,000 এর নিচে নেমে এসেছে। এই পতনটি দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবার এই স্তরের নিচে নামা, যার ফলে প্রায় $113 মিলিয়ন লিভারেজড লং পজিশন লিকুইডেট হয়েছে। এই সংশোধনের পূর্বে, ১৪ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে বিটকয়েন $124,480.82 এর রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
এই পতনের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিনান্সিয়াল (World Liberty Financial) এর একটি অংশীদার প্রতিষ্ঠান Alt5 Sigma-এর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য জালিয়াতি এবং স্টক ম্যানিপুলেশনের তদন্ত শুরু করেছে। এই তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন Alt5 Sigma-এর সিইও জন আইজ্যাক, যার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের লাভ বাড়িয়ে দেখানো, খরচ কম দেখানো এবং অভ্যন্তরীণ সুবিধার জন্য মূল্যায়ন কারসাজির অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনাটি ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে নিয়ন্ত্রক ঝুঁকি এবং স্বচ্ছতার অভাবের উপর আলোকপাত করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ক্ষেত্রে, একটি নতুন গবেষণা ইঙ্গিত দিয়েছে যে বেশিরভাগ কোম্পানি তাদের AI পাইলট প্রোগ্রাম থেকে দ্রুত রাজস্ব বৃদ্ধি অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। এমআইটি (MIT) এর NANDA উদ্যোগের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রায় ৯৫% কোম্পানি এই ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফল পাচ্ছে না। এই তথ্য প্রযুক্তি খাতের উপর একটি সতর্ক বার্তা বহন করে, যেখানে AI-এর বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
অর্থনৈতিক ফ্রন্টে, নতুন মার্কিন আমদানি শুল্ক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। সরকার অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাত-যুক্ত ৪০৭টি পণ্যের উপর ৫০% শুল্ক আরোপ করেছে, যা সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত এবং ভোক্তাদের জন্য মূল্যবৃদ্ধির উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ইউবিএস (UBS) ব্যাংক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ফেডারেল রিজার্ভের নীতি শিথিলকরণের প্রত্যাশায় সোনার দামের পূর্বাভাস বাড়িয়েছে, যা বৃহত্তর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দেয়।
বিটকয়েনের ডেরিভেটিভস বাজারেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্কতামূলক মনোভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। বিটকয়েন অপশন স্কিউ মেট্রিক বিয়ারিশ (bearish) হয়ে উঠেছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতি এবং সম্ভাব্য মূল্য পতনের প্রত্যাশা নির্দেশ করে। বিটকয়েনের ৩০-দিনের অপশন ডেল্টা স্কিউ (put-call) ১২% এ পৌঁছেছে, যা চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। যদিও এই ধরনের ভীতি অতীতে মূল্যবৃদ্ধির আগে দেখা গেছে, এটি বাজারের বর্তমান উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে।
এই পরিস্থিতিগুলো সম্মিলিতভাবে বিটকয়েনের মূল্যের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এসইসি-র তদন্ত, এআই (AI) গ্রহণের চ্যালেঞ্জ এবং বাণিজ্য উত্তেজনার মতো বিষয়গুলো বাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে, কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে বর্তমান অস্থিরতা দীর্ঘমেয়াদী বুলিশ (bullish) প্রবণতাকে বাতিল করে না এবং এটি একটি সুযোগও তৈরি করতে পারে।