মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট জাজ এলভিন হেলারস্টাইন এলন মাস্ক এবং টেসলার বিরুদ্ধে ডজকয়েন (Dogecoin) ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য ম্যানিপুলেট করার অভিযোগে দায়ের করা ২৫৮ বিলিয়ন ডলারের মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। এই রায়ে মাস্কের মন্তব্যগুলোকে 'উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং অতিরঞ্জিত' বলে অভিহিত করা হয়েছে, যা কোনো যুক্তিসঙ্গত বিনিয়োগকারী দ্বারা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ২০২২ সালের জুন মাসে দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল যে, মাস্ক তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং জনসাধারণের মন্তব্যের মাধ্যমে ডজকয়েনের মূল্য কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধি করেছেন, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
মামলার অভিযোগ অনুসারে, ডজকয়েনের মূল্য ৩৬,০০০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং মাস্ক ও টেসলা এতে বিলিয়ন ডলার লাভ করেছে। মাস্কের আইনজীবী এই অভিযোগগুলোকে 'কাল্পনিক' বলে অভিহিত করেছেন এবং তার টুইটগুলোকে 'নিরীহ ও প্রায়শই হাস্যকর' বলে উল্লেখ করেছেন। বিচারপতি হেলারস্টাইন তার রায়ে বলেন যে, মাস্কের ডজকয়েন সম্পর্কিত মন্তব্যগুলো 'তথ্যভিত্তিক নয়, বরং উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং অতিরঞ্জিত', যা কোনো বিনিয়োগকারী বিশ্বাস করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এই ধরনের মন্তব্যকে আইনে 'পাফারি' (puffery) বলা হয়, যার অর্থ হলো সাধারণ প্রশংসা যা আইনত বাধ্যতামূলক নয়। এই রায়ের পর ডজকয়েনের মূল্যে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি, যা গত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ০.১% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রায় ০.১০ ডলারে লেনদেন হচ্ছে। যদিও এই নির্দিষ্ট মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে, এলন মাস্কের ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারের উপর প্রভাব এখনও আলোচনার বিষয়। অতীতে, মাস্কের টুইটগুলো ডজকয়েন এবং বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যে উল্লেখযোগ্য ওঠানামা সৃষ্টি করেছে। যেমন, ২০২১ সালে টেসলার বিটকয়েনে ১.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণায় বিটকয়েনের মূল্য ৫৪,০০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পরিবেশগত উদ্বেগের কারণে মাস্কের পরবর্তী টুইটে বিটকয়েনের মূল্য ১০% কমে গিয়েছিল। অন্যদিকে, 'টেসলা টেকডাউন' (Tesla Takedown) আন্দোলন এবং 'ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি' (DOGE) এর মতো বিষয়গুলো মাস্কের ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে চলমান আলোচনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ২০২২ সালের জুন মাসে দায়ের করা এই মামলাটি ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণের বিতর্ক, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সামাজিক মাধ্যমে প্রভাব এবং বাজার ম্যানিপুলেশনের আইনি সীমানা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করে। এই রায় ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মন্তব্যের আইনি ব্যাখ্যায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।