লিঙ্কনশায়ারের একটি নিলামে কটিংলি পরীদের ছবির একটি সম্পূর্ণ সেট, যার মধ্যে দুর্লভ পঞ্চম ছবিটিও অন্তর্ভুক্ত ছিল, £3,100 মূল্যে বিক্রি হয়েছে। এই ছবিগুলি এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে মানুষের কল্পনাকে আলোড়িত করেছে, এমনকি যখন এর পেছনের সত্যতা প্রকাশিত হয়েছিল তখনও এর আকর্ষণ কমেনি।
১৯১৭ সালে, ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের কটিংলি গ্রামে দুই খুদে কাজিন, ১৬ বছর বয়সী এলসি রাইট এবং ৯ বছর বয়সী ফ্রান্সিস গ্রিফিথস, তাদের বাগানের ধারে পরীদের ছবি তোলে। এই পরীরা আসলে ছিল এলসির বাবার ক্যামেরা ব্যবহার করে তৈরি করা কার্ডবোর্ডের কাটআউট, যা 'প্রিন্সেস মেরির গিফট বুক' নামক একটি জনপ্রিয় শিশুতোষ বইয়ের ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়েছিল এবং হ্যাটপিন দিয়ে দাঁড় করানো হয়েছিল। এই ছবিগুলো প্রথমদিকে নিছক একটি কৌতুক হিসেবে তৈরি হলেও, তা শীঘ্রই বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
শার্লক হোমসের স্রষ্টা, স্যার আর্থার কোনান ডয়েল, যিনি আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী ছিলেন, ১৯২০ সালে 'দ্য স্ট্র্যান্ড' ম্যাগাজিনে এই ছবিগুলো প্রকাশ করেন। তিনি এগুলোকে পরীদের অস্তিত্বের অকাট্য প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেন। এমনকি তিনি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ছবিগুলো পরীক্ষা করিয়েছিলেন, যারা সেগুলোর নেগেটিভে কোনো কারচুপির প্রমাণ খুঁজে পাননি এবং কেউ কেউ ছবিগুলোকে 'নকল নয়' বলেও মত দিয়েছিলেন।
যদিও ১৯৮০-এর দশকে এলসি এবং ফ্রান্সিস স্বীকার করেছিলেন যে তারা ছবিগুলো তৈরি করেছিল, ফ্রান্সিস তার শেষ দিন পর্যন্ত পঞ্চম ছবিটিকে আসল বলে দাবি করেছিলেন। এই ছবিগুলো একটি ডেভনের কৃষি পরিবার তাদের 'অ্যান্টিকস রোডশো' অনুষ্ঠানে দেখার পর এর বিরলতা সম্পর্কে জানতে পারে। লিথ-এর জন টেইলরস-এ অনুষ্ঠিত নিলামে ছবিগুলোর জন্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। শেষ পর্যন্ত, ল্যাঙ্কাশায়ারের রসেন্ডেল এলাকার একজন ক্রেতা £3,100 মূল্যে ছবিগুলো কিনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এই ঐতিহাসিক ছবিগুলো কেবল একটি প্রতারণা নয়, বরং মানুষের অদম্য কল্পনা এবং অলৌকিক কিছুর প্রতি চিরন্তন আকাঙ্ক্ষার এক প্রতীক হয়ে রয়ে গেছে, যা আজও আমাদের মুগ্ধ করে।