আগামী ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে জেনেভার ক্রিস্টি'স-এর 'ম্যাগনিফিসেন্ট জুয়েলস' নিলামে প্রদর্শিত হতে চলেছে 'দ্য মেলন ব্লু' নামে পরিচিত এক অসাধারণ হীরা। ৯.৫১ ক্যারেটের এই ফ্যান্সি ভিভিড ব্লু হীরাটি ইন্টারনালি ফ্লোলেস (Internally Flawless) হিসেবে স্বীকৃত এবং এটি একটি আংটিতে বসানো হয়েছে। এই বিরল রত্নটির আনুমানিক মূল্য ২০ মিলিয়ন থেকে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আমেরিকার প্রখ্যাত উদ্যানপালক এবং জনহিতৈষী রেচেল ল্যামবার্ট মেলনের (Rachel Lambert Mellon) মালিকানাধীন এই হীরাটি তার তীব্র নীল রঙ এবং বিশুদ্ধতার জন্য বিশেষভাবে সমাদৃত। এর পূর্বে মেলন পরিবারের একটি নীল হীরা ২০১৪ সালে ৩২.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়ে একটি রেকর্ড স্থাপন করেছিল। নীল হীরার রঙের উৎস হলো বোরনের (boron) মতো অতি ক্ষুদ্র উপাদানের উপস্থিতি।
এই বিশেষ নিলামে ৬.২৪ ক্যারেটের একটি ফ্যান্সি ডিপ ব্লু (Fancy Deep Blue) হীরার আংটিও থাকবে, যা পূর্বে প্রতি ক্যারেটে একটি রেকর্ড মূল্যে বিক্রি হয়েছিল। ঐতিহাসিকভাবে, নীল হীরাগুলি অত্যন্ত বিরল এবং মূল্যবান বলে বিবেচিত হয়। পৃথিবীর মোট হীরার মাত্র ০.০২% নীল রঙের হয়। এদের দুর্লভতা এবং মনোমুগ্ধকর রঙের কারণে, নীল হীরাগুলি সংগ্রহকারীদের কাছে বিশেষ আগ্রহের বিষয়। ১৭শ শতাব্দীতে ভারতে প্রথম উল্লেখযোগ্য নীল হীরার সন্ধান পাওয়া যায়, বিশেষ করে গোলকোন্ডা অঞ্চলের খনিগুলিতে। বিখ্যাত হোপ ডায়মন্ড (Hope Diamond) এমনই একটি রত্ন, যা প্রায় চার শতাব্দী ধরে ঐতিহাসিক তাৎপর্য বহন করছে।
ক্রিস্টি'স-এর জুয়েলারি বিভাগের আন্তর্জাতিক প্রধান রাহুল কডাকিয়া (Rahul Kadakia) বলেন, “মেলন ব্লু কেবল একটি ঝলমলে পাথর নয়, এটি একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস, রহস্য এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সংগ্রাহকদের মুগ্ধ করে আসা এক বিরলতার প্রতীক।” তিনি আরও যোগ করেন যে, ক্রিস্টি'স ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে শীর্ষ ১০টি রত্নের মধ্যে নয়টি বিক্রি করেছে, যা ২৫% বৃদ্ধি নির্দেশ করে। এই 'মেলন ব্লু' হীরাটি কেবল তার আর্থিক মূল্যের জন্যই নয়, বরং এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং বিরলতার জন্যও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।