সৌদি আরবের লোহিত সাগরের উপকূলে, উম্মাহাত দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত নুজুমা, এ রিটজ-কার্লটন রিজার্ভ রেসিডেন্স, 'বেয়ারফুট লাক্সারি' বা প্রকৃতির সান্নিধ্যে বিলাসবহুল জীবনযাপনের এক নতুন ধারণা নিয়ে এসেছে। এই বিশেষ আবাসনটি কেবল ব্যক্তিগত জলযান বা সি-প্লেন যোগেই পৌঁছানো যায়, যা এক নিরিবিলি ও শান্তিময় অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি দেয়। এটি স্থানীয় স্থাপত্যশৈলী এবং ব্যক্তিগতকৃত পরিষেবার এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে এক গভীর সংযোগ স্থাপন করে।
ফস্টার + পার্টনার্স এবং উইম্বার্লি ইন্টেরিয়র্স দ্বারা নকশা করা ১৯টি ভিলা প্রাকৃতিক বালুচরের আদলে তৈরি। এদের স্থাপত্যশৈলী মাটি ও জোয়ার-ভাটার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করে। চুনাপাথর, ঝিনুক এবং সূর্য-ধোয়া কাঠের মতো উপকরণ সমুদ্র ও ভূমির সঙ্গে মিশে গিয়ে স্থানীয় কারুশিল্পের এক চমৎকার নিদর্শন তৈরি করেছে। প্রতিটি ভিলায় রয়েছে প্রশস্ত টেরেস এবং সহজে খোলা যায় এমন কাঁচের দেওয়াল, যা প্রচুর প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক জীবনের এক seamless অভিজ্ঞতা উপভোগ করা যায়, যেখানে ব্যক্তিগত সুইমিং পুল, সানডেক এবং নিজস্ব সমুদ্র সৈকতের প্রবেশাধিকার রয়েছে।
দ্বীপের শান্ত ও ধীরগতির জীবনধারা প্রতিটি মুহূর্তকে মূল্যবান ও দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে। রিটজ-কার্লটন রিজার্ভের আতিথেয়তা এখানে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। নিবেদিত বাটলার, শেফ এবং কনসিয়ার্জদের একটি দল স্বজ্ঞাত ও বিচক্ষণ পরিষেবা প্রদান করে। নুজুমা-র বাসিন্দারা স্থানীয় ঐতিহ্য থেকে অনুপ্রাণিত সুস্থতা থেরাপির জন্য নেইরা স্পা (Neyrah Spa)-তে সময় কাটাতে পারেন এবং যোগা ও মেডিটেশন কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন। নেইরা স্পা 'বিশ্বের সেরা রিসোর্ট স্পা' (Best Resort Spa in Saudi Arabia 2024) হিসেবে বিশ্ব স্পা পুরস্কার (World Spa Awards) লাভ করেছে।
নুজুমা কেবল একটি আবাসন নয়, এটি লোহিত সাগরের বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত হওয়ার একটি সুযোগ। এখানে বিশ্বমানের স্নোরকেলিং, কায়াকিং এবং ডাইভিংয়ের মতো কার্যকলাপের পাশাপাশি অভিযাত্রীদের জন্য রয়েছে বিশেষ মরুভূমি ট্রেইল ও হাইকিংয়ের ব্যবস্থা, এবং জ্যোতির্বিদ্যা-নেতৃত্বাধীন তারা দেখার অভিজ্ঞতা।
সৌদি আরবের 'ভিশন ২০৩০' (Vision 2030) কর্মসূচির অংশ হিসেবে লোহিত সাগর অঞ্চলটি একটি বিশ্বমানের বিলাসবহুল পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। নুজুমা এই রূপান্তরের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা পরিবেশগত দায়িত্ববোধ এবং উন্নত জীবনযাত্রার এক নতুন মান স্থাপন করেছে। এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ নবায়নযোগ্য শক্তিতে পরিচালিত হয়, যা পরিবেশ-বান্ধব উপকূলীয় জীবনযাপনের এক নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছে। লোহিত সাগর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও সম্পূর্ণ নবায়নযোগ্য শক্তিতে চালিত, যা এই অঞ্চলের পরিবেশ-সচেতনতার প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন। এই উন্নয়ন কেবল বিলাসবহুল আবাসনই নয়, বরং এটি সৌদি আরবের অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করার এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ মিলিয়ন দর্শক আকর্ষণের বৃহত্তর লক্ষ্যের সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ।