বিশ্বজুড়ে সংবাদ এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুসারে, প্রায় ৪০% মানুষ সক্রিয়ভাবে সংবাদ এড়িয়ে চলেন, যা ২০১৭ সালের ২৯% থেকে একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।
এই প্রবণতার পেছনে বেশ কিছু কারণ বিদ্যমান। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৩৯% মানুষ মনে করেন সংবাদ তাদের মেজাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ৩১% তথ্যের বিপুল পরিমাণ দেখে অভিভূত বোধ করেন। এছাড়াও, ৩০% মানুষ যুদ্ধ ও সংঘাতের অবিরাম সংস্পর্শে আসার কারণে এবং ২০% প্রাপ্ত তথ্যের উপর কাজ করতে ক্ষমতাহীন বোধ করায় সংবাদ এড়িয়ে চলেন।
তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে ১৮-২৪ বছর বয়সীরা, সংবাদ বোঝা কঠিন মনে হওয়ায় বা তাদের জীবনের সাথে অপ্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় বেশি করে সংবাদ এড়িয়ে চলে। এই ক্রমবর্ধমান বিচ্ছিন্নতা একটি অবগত জনমত এবং নাগরিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের কৌশল পরিবর্তন করছে। অনেক সংস্থা বিশ্লেষণাত্মক বিষয়বস্তুর উপর বেশি মনোযোগ দিচ্ছে, ব্যক্তিগতকরণের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে এবং জনসাধারণের আগ্রহের বিষয়গুলিতে আলোকপাত করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংবাদের প্রতি এই অনীহা কেবল ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয় নয়, বরং এটি সমাজের বৃহত্তর চিত্রকেও প্রতিফলিত করে, যেখানে মানুষ তথ্যের অতি প্রাচুর্য এবং সংবাদের নেতিবাচকতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চায়।
সংবাদমাধ্যমগুলো এখন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষণীয় বিষয়বস্তু তৈরির দিকে মনোনিবেশ করছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছানোর জন্য তারা ভিডিও, পডকাস্ট এবং ইন্টারেক্টিভ কন্টেন্টের মতো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ও ফরম্যাট ব্যবহার করছে। এই পরিবর্তনগুলি তথ্যের সহজলভ্যতা এবং ব্যক্তিগতকরণের উপর জোর দিয়ে সংবাদ শিল্পের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।