২০২৫ সালের রোল্যান্ড গারোস-এ কার্লোস আলকারাজের বিজয় ক্রীড়াঙ্গনে মানসিক শক্তির অপরিহার্য ভূমিকার উপর আলোকপাত করেছে। আলকারাজ তার এই স্মরণীয় জয়ের কৃতিত্ব দিয়েছেন দৈনিক মনস্তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণকে, বিশেষ করে মোটর ইমেজেরি বা মানসিক চিত্রকল্পের উপর। মোটর ইমেজেরি হলো শারীরিক কার্যকলাপ ছাড়াই কোনো নড়াচড়ার কল্পনা করা, যা মস্তিষ্কের একই অংশকে সক্রিয় করে তোলে যেমনটা শারীরিক অনুশীলনের সময় হয়।
কার্যকরী সমতা তত্ত্ব (functional equivalence theory) দ্বারা সমর্থিত এই মানসিক অনুশীলন, শারীরিক চাপ বৃদ্ধি ছাড়াই ক্রীড়াবিদদের মোটর শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি ক্রীড়াবিদদের কৌশল আয়ত্ত করতে, ক্রিয়াগুলিকে স্বয়ংক্রিয় করতে এবং সূক্ষ্ম বিষয়গুলি নিখুঁত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, এই মানসিক কৌশলটি আঘাত বা স্নায়বিক রোগের কারণে পুনরুদ্ধারের সময় মোটর প্যাটার্নগুলিকে সক্রিয় রাখতেও সহায়ক।
শারীরিক দক্ষতার বাইরে, মানসিক অনুশীলন আবেগ নিয়ন্ত্রণে, কঠিন পরিস্থিতি অনুমান করতে এবং মানসিক চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কল্পিত পরিস্থিতির প্রতি মনের প্রতিক্রিয়া বাস্তব শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটাতে পারে, যা মন-শরীরের সংযোগকে তুলে ধরে। কার্যকরী মানসিক অনুশীলনের জন্য সুসংগঠিত ভিজ্যুয়ালাইজেশন, স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ এবং শারীরিক প্রশিক্ষণের সাথে একীকরণ প্রয়োজন। এই সম্মিলিত পদ্ধতি ক্রীড়াবিদদের প্রস্তুতি, পারফরম্যান্স এবং পুনরুদ্ধারের উন্নতি ঘটায়, যা সাধারণ মানুষের জন্যও সমানভাবে মূল্যবান প্রমাণিত হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রায় ৭০-৯০% শীর্ষ ক্রীড়াবিদ তাদের পারফরম্যান্স উন্নত করতে মোটর ইমেজেরি ব্যবহার করেন। পেশাদার খেলোয়াড়রা অপেশাদারদের তুলনায় এটি বেশি ব্যবহার করে থাকেন। মোটর ইমেজেরি কেবল খেলাই নয়, পুনর্বাসন কর্মসূচিতেও কর্মক্ষমতা উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে। এই মানসিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, ক্রীড়াবিদরা তাদের মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে পারেন, যা তাদের পারফরম্যান্স এবং পুনরুদ্ধারের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি ক্রীড়াবিদদের চাপ মোকাবেলা করতে, মনোযোগ বাড়াতে এবং তাদের খেলার প্রতি গভীর সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে।