প্যারিস হিলটনের অ্যানিমেটেড প্রকল্প ‘Paris & Pups’: পোষা প্রাণীর যত্নের মাধ্যমে দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা শেখানো

বিখ্যাত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব প্যারিস হিলটন, যিনি বর্তমানে দুই সন্তানের জননী—জানুয়ারি ২০২৩-এ জন্ম নেওয়া পুত্র ফিনিক্স ব্যারন এবং নভেম্বর ২০২৩-এ জন্ম নেওয়া কন্যা লন্ডন মেরিলিনের মা—তিনি প্রায়শই প্রকাশ করেছেন যে তাঁর সন্তানেরা তাঁর পশুপ্রেমের উত্তরাধিকারী হয়েছে। প্যারিস দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে শৈশব থেকেই পোষা প্রাণীর যত্ন নেওয়া নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ববোধ এবং সহানুভূতিশীলতার মতো গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী শেখায়। নিজের সন্তান জন্মের আগে কুকুরদেরকেই তিনি 'প্রথম সন্তান' বলে উল্লেখ করতেন, যা তাঁর মাতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই নীতিমালার ওপর ভিত্তি করেই তিনি তরুণ দর্শকদের জন্য একটি নতুন প্রকল্প শুরু করেছেন, যা হলো ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত সাপ্তাহিক অ্যানিমেটেড সিরিজ ‘Paris & Pups’। এই সিরিজের প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর।

এই সিরিজটি তৈরি হয়েছে 11:11 Media, HappyNest Entertainment এবং 9 Story Media Group-এর সহযোগিতায়। এর কাহিনি আবর্তিত হয়েছে ১২ বছর বয়সী চরিত্র স্টার এবং তার পাঁচটি কথা বলতে পারা কুকুরছানার রোমাঞ্চকর অভিযান নিয়ে। সিরিজটি প্যারিস হিলটনের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং তাঁর আসল পোষা প্রাণীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত। এর মূল লক্ষ্য হলো ছোট দর্শকদের কাছে দয়া, বন্ধুত্ব এবং দলবদ্ধ কাজের মতো নৈতিক শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া।

প্যারিসের জীবনে তাঁর প্রথম কুকুর, চিহুয়াহুয়া প্রজাতির টিঙ্কারবেল, এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। ২০১৫ সালে ১৪ বছর বয়সে টিঙ্কারবেল মারা যায়। হিলটনের খ্যাতি যখন তুঙ্গে, তখন এই সঙ্গী সবসময় তাঁর পাশে থাকত। এমনকি ধারণা করা হয়, ২০০৮ সালে 'ব্যাগ-এ-ডগ' ট্রেন্ড শুরু হওয়ার পেছনেও টিঙ্কারবেলের প্রভাব ছিল। প্যারিস এই কুকুরটিকে তাঁর 'ট্র্যাভেল ডগ' বলতেন এবং টিঙ্কারবেলের সঙ্গে কাটানো সময় তাঁকে নিঃশর্ত ভালোবাসার গভীরতা বুঝতে শিখিয়েছিল।

প্যারিস এমন একটি কনটেন্ট তৈরি করতে চেয়েছিলেন যা তিনি তাঁর সন্তানদের সঙ্গে বসে উপভোগ করতে পারবেন। এই সিরিজটি মূলত ৫ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। প্যারিসের মতে, ফিনিক্স এবং লন্ডনই প্রথম দর্শক যারা এই সিরিজটি দেখে অনুমোদন দিয়েছে। ‘Paris & Pups’-এর জন্য প্যারিস নিজেই টাইটেল গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন, যা তাঁর ব্যক্তিগত সংযোগকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে।

বর্তমানে এই প্রকল্পের ইউটিউব চ্যানেলে এক লক্ষেরও বেশি গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন, যা এর জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেয়। এই সাফল্য নির্দেশ করে যে শিক্ষামূলক বিনোদনের প্রতি শিশুদের আগ্রহ রয়েছে।

শিশু বিকাশের বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই উল্লেখ করেন যে বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকা দায়িত্ববোধ অনুশীলনের জন্য এক চমৎকার সুযোগ এনে দেয়। কারণ, প্রতিদিনের যত্ন নেওয়ার জন্য ধারাবাহিকতা এবং অঙ্গীকার প্রয়োজন। প্রাণীদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া শিশুদের আবেগিক বুদ্ধিমত্তা বিকাশেও সাহায্য করে। শিশুরা প্রাণীর অঙ্গভঙ্গি বা নীরব সংকেত বুঝতে শেখে, যা সহানুভূতি বিকাশের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্যারিসের এই উদ্যোগ শিশুদের মধ্যে সেই সংবেদনশীলতা জাগিয়ে তুলতে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।