হাঙ্গেরির উচ্চশিক্ষা সংস্কার: বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ও জাতীয় মূল্যবোধের মেলবন্ধন

সম্পাদনা করেছেন: Olga Samsonova

২০২১ সাল থেকে হাঙ্গেরি তার উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ফাউন্ডেশন মডেলে রূপান্তর এবং ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালনা। এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জাতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করা এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করা। 'ইউনিভার্সিটিজ ২০৩০' (Universities 2030) কর্মসূচির অধীনে, হাঙ্গেরি ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টির মধ্যে এবং কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউরোপের শীর্ষ ১০০টির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, ১২টি হাঙ্গেরীয় প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ৫% এর মধ্যে স্থান করে নিয়েছে, যার মধ্যে তিনটি শীর্ষ ২%-এ এবং সেমেলওয়েস বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ১%-এ পৌঁছেছে। Eötvös Loránd University (ELTE) বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং (CWUR) তালিকায় ৩৮তম স্থান অর্জন করে বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ২.৪%-এর মধ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নতুন পরিচালনা কাঠামো তাদের অধিকতর স্বায়ত্তশাসন ও নমনীয়তা প্রদান করেছে। তবে, এই সংস্কারগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) নজরে এসেছে। ডিসেম্বর ২০২৪-এ, ইইউ হাঙ্গেরির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসনের উপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং দেশটির কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য Erasmus+ ও Horizon Europe তহবিল স্থগিত করে। ইইউ-এর মতে, হাঙ্গেরি এখনও আইনের শাসন এবং স্বার্থের সংঘাত সম্পর্কিত বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে সমাধান করতে পারেনি, যা এই তহবিলগুলো থেকে তাদের বাদ পড়ার কারণ হয়েছে। এই পদক্ষেপ হাঙ্গেরির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও গবেষণা কার্যক্রমে প্রভাব ফেলেছে। একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল Balázs Orbán-এর Eötvös Loránd University-তে সাংবিধানিক বিষয় নিয়ে তার পিএইচডি থিসিসের প্রতিরক্ষা, যা রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের সম্মুখীন হলেও সর্বোচ্চ সম্মান লাভ করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনো অনিয়মের প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। হাঙ্গেরির এই সংস্কারগুলো পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা একাডেমিক অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং-এ উন্নতির পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভর্তি এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক উপস্থিতি জোরদার করেছে। যদিও সংস্কারগুলো ইতিবাচক ফলাফল দেখাচ্ছে, সরকারি প্রভাব ও একাডেমিক স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হিসেবে রয়ে গেছে।

উৎসসমূহ

  • Newsweek

  • Átlátszó

  • Hungarian Conservative

  • Times Higher Education

  • Times Higher Education

  • Hungary Today

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।