বৃষ্টির জল সংরক্ষণে পিটাছড়া বনের পুনরুজ্জীবন
চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত পিটাছড়া বন এক উল্লেখযোগ্য পুনরুজ্জীবন প্রত্যক্ষ করছে । বনভূমি ধ্বংস ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে এই বনের প্রাকৃতিক জলধারাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছিল, যা বনের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল ।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ কৌশল
মাহফুজ আহমেদ রাসেলের নেতৃত্বে পিটাছড়া বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ উদ্যোগ, বৃষ্টির জল সংরক্ষণের একটি কৌশল গ্রহণ করে । বর্ষাকালে বৃষ্টির জল ধরে রাখতে এবং শুষ্ক মৌসুমে নিকটবর্তী ঝর্ণাগুলোতে জল সরবরাহ করতে তিনটি কৃত্রিম পুকুর খনন করা হয়েছে । এই উদ্ভাবনী পদক্ষেপের ফলে ঝর্ণাগুলো বছরে ছয় মাস পর্যন্ত সজীব থাকে, যা একটি সমৃদ্ধ বাস্তুতন্ত্রকে সহায়তা করে ।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ
পিটাছড়া বন বেঙ্গল স্লো লরিস এবং প্রায় ১৫০টির বেশি প্রজাতির পাখির আবাসস্থল । এই বনভূমি ছোট ও মাঝারি আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী, উভচর এবং সরীসৃপসহ বিভিন্ন প্রজাতির আবাসস্থল ।
ঝর্ণা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ
২০২৪ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, খাগড়াছড়ি অঞ্চলের ১৫% ঝর্ণা শুকিয়ে গেছে । বিশেষজ্ঞরা এর জন্য বনভূমি ধ্বংস, অপরিকল্পিত চাষাবাদ ও জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন । রাসেল কর্তৃক গৃহীত প্রকল্পটি প্রকৃতি-ভিত্তিক একটি সমাধান, যা বিশেষজ্ঞরা অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন ।
ชุมชนের অংশগ্রহণ
এই উদ্যোগ অবৈধ গাছ কাটা ও ভূমি দখল রোধে স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে । পিটাছড়া বন বর্তমানে উন্নতি লাভ করছে এবং এটি природоохранный প্রচেষ্টার মডেল হিসেবে কাজ করছে । এই প্রকল্পের সাফল্য পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে समुदाय-নেতৃত্বাধীন সংরক্ষণের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে ।
সার্থকতা
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ শুধুমাত্র জলের উৎস রক্ষা করে না, বরং স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মানকেও উন্নত করে । এই ধরনের প্রকল্প ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই আবাস তৈরি করতে সহায়ক ।
পিটাছড়া বনের এই পুনরুজ্জীবন প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে এক নতুন সম্পর্ক তৈরি করেছে, যা পরিবেশ সুরক্ষায় একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।