মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের ইসরায়েল সফর: গাজায় ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা
সম্পাদনা করেছেন: Svetlana Velgush
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে মঙ্গলবার, ২০২১ সালের ২১শে অক্টোবর ইসরায়েলে পদার্পণ করেছেন। তাঁর সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো গাজা উপত্যকায় পূর্বে মার্কিন মধ্যস্থতায় অর্জিত দুর্বল যুদ্ধবিরতিকে সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়া এবং চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে সফলভাবে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি আলোচনা করা। ভ্যান্সের এই আগমন ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার প্রতি যে চরম গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। চলমান উত্তেজনা এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই স্থিতাবস্থা রক্ষা করা অপরিহার্য।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের সফরসূচিতে একাধিক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ সহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে তাঁর আলোচনা নির্ধারিত আছে। বিশেষ করে, জিম্মিদের পরিবার এবং সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ সূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা কূটনৈতিক চাপ এবং মানবিক সংবেদনশীলতার সমন্বয়ে ওয়াশিংটনের বহুমুখী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। ভ্যান্স জেরুজালেমে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করারও পরিকল্পনা করেছেন। উল্লেখ্য, যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ এবং হোয়াইট হাউসের প্রধান উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার ইতোমধ্যে আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত আছেন এবং এই মিশনে অংশ নিচ্ছেন।
এই সফরের তাৎক্ষণিক প্রেক্ষাপট সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে কিছুটা ম্লান হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রাফাহতে জঙ্গিদের গোলাবর্ষণে দুজন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছে, যা ইসরায়েলকে পাল্টা আঘাত হানতে প্ররোচিত করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, এই পাল্টা হামলায় ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই ঘটনাগুলি পরিষ্কারভাবে দেখায় যে, ১০ই অক্টোবর, ২০২১ তারিখে কার্যকর হওয়া বর্তমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি কতটা ভঙ্গুর। এই পরিস্থিতির মধ্যেও হামাসের আলোচক, বিশেষত খালিল আল-হাইয়া, যুদ্ধের সমাপ্তির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক ঐকমত্যের কথা উল্লেখ করে যুদ্ধবিরতি শেষ পর্যন্ত বজায় রাখার দৃঢ়তা প্রকাশ করেছেন।
পরিস্থিতির বিশ্লেষণ ইঙ্গিত দেয় যে, এই উচ্চ-স্তরের হস্তক্ষেপের লক্ষ্য হলো সামগ্রিক শান্তি কাঠামোকে শক্তিশালী করা, যা স্থানীয় ঘটনা দ্বারা সহজেই বিঘ্নিত হতে পারে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টাগুলি কেবল সাময়িক শান্তিবস্থার বাইরে গিয়ে টেকসই সমাধানের জন্য অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। অতিরিক্ত তথ্যানুযায়ী, আলোচনায় অঞ্চলটির পুনর্গঠন ও পরিচালনার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, সেইসাথে দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতার জন্য পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া এবং উন্মুক্ত মানবিক করিডোর নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী হিসেবে ভ্যান্সের ইসরায়েলে আগমন এই বার্তা দেয় যে, চলমান পরিস্থিতির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং গভীর মনোযোগ রয়েছে, যা এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
উৎসসমূহ
Idaho State Journal
i24NEWS
The Jerusalem Post
The Jerusalem Post
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
